এক মণ ধানের দামেও মিলছে না একজন শ্রমিক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ উত্তরের শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত বগুড়া জেলা। আর সেই বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে পাকা ধানের শীষ। সম্প্রতি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে নুইয়ে পড়েছে অনেক জমির পাকা বা আধাপাকা ধান। তাই তো ধান কাটার তাগিদ অনুভব করছেন গৃহস্থরা।

কিন্তু বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন শ্রমিক সংকটের কারণে। ধান কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক। ভেজা ধানের পাইকারি বাজার প্রতি মণ ৮০০-৯০০ টাকা। আর একজন শ্রমিককেই দৈনিক মজুরি দিতে হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। তবু মিলছে না শ্রমিক। সব মিলিয়ে বোরো ধান নিয়ে বিপাকে রয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২০ হাজার ৩৮৫ হেক্টর।

সুবর্ণলতা, কাটারিভোগ, মিনিকেট, ব্রি ধান-২৮, ২৯ ও উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানসহ বেশ কয়েক জাতের ধান চাষ করেন কৃষকরা। তবে বৈশাখ মাসের প্রথম থেকেই উপজেলায় মাঝে মাঝে বৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক কৃষক তড়িঘড়ি করে ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।

কুসুম্বী ইউনিয়নের দু-একটি নিচু বিল নামা জামুর এলাকার পানিতে দেখা দিয়েছে জোক। ফলে ওই এলাকার কৃষকদের সমস্যা আরও জটিল।

উপজেলার অন্যান্য এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে ঝড়বৃষ্টিতে পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে নুইয়ে পড়ে ধানগাছে পঁচন ও ধানে চারা গজাতে শুরু করেছে। ফলে অনেকেই ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে শ্রমিক নিয়ে আধাপাকা ধান কাটছেন।

উপজেলার খানপুর, সুঘাট, মির্জাপুর, কুসুম্বী ইউনিয়নের অনেকেই জানান, মজুরি হিসেবে এক মণ ধানের দাম দিয়েও মিলছে না একজন শ্রমিক। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। আবার কোথাও কোথাও ৬-৭ হাজার টাকা বিঘা চুক্তি। অন্যান্য খরচ তো আছেই। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক কৃষক নিজেরাই শুরু করেছেন ধানকাটা। তবে কমবেশী সব এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাই শ্রমিকদের চাহিদা বেশি। ধানকাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে ধানের দাম গত বছরের চেয়ে মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমে কেনাবেচা হচ্ছে। এ বছর কৃষকদের কাছ থেকে সুবর্নলতা ব্রি ধান ২৮ ভেজা প্রতি মণ ধান কেনা হয়েছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে। কাটারিভোগ ও মিনিকেট ভেজা ধান প্রতি মণ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, গত বছর ছিল ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, এবার উপজেলায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে,তবে দাম একটু কম, তারা কৃষকদের ধান ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। যাতে সংরক্ষিত ধান কৃষকরা পরে বিক্রি করে ভালো দাম পান ও লাভবান হন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর