নাটোরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৭ জন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় নিহত হলেন ৭ জন। তাদের মধ্যে ৫ পুরুষ ও ২ নারী। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ যাত্রী।

শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার মহিষভাঙ্গা এলাকায় গাজী অটোরাইস মিলের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল পরিবহন ও ঢাকাগামী সিয়াম পরিবহনের মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন সিয়াম পরিবহনের যাত্রী নাটোর সদর থানার পাইকোরদল এলাকার প্রবাসী শাহজাহান মিয়ার ছেলে কাউছার রহমান (১৭) এবং মেয় সাদিয়া আক্তার (১৩) ও শ্যালক নাটোর সদর থানার পাইকোরদল এলাকার মুক্তার হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪৮) এবং ন্যাশনাল পরিবহনের যাত্রী নাটোরের লালপুর থানার ওয়ালিয়া এলাকার মোহনা আক্তার মিলি (২৬), মাগুড়া সদর থানার মিজানুর রহমান (৩০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার মশিউর রহমান (২৫) ও টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার বেঙ্গুনিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল (২৬)।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঢাকা থেকে ন্যাশনাল পরিবহনের একটি বাস রাজশাহী অভিমুখে যাচ্ছিল। বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের মহিষভাঙ্গা এলাকার গাজী অটোরাইস মিলের সামনে একটি বাসকে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা সিয়াম পরিবহনের বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিয়াম পরিবহন ছিটকে গিয়ে গাজী অটোরাইস মিলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে। ন্যাশনাল পরিবহনও মহাসড়কের পাশের গাছের সাথে ধাক্কা লেগে কিছুটা নেমে যায়।

এতে ন্যাশনালের ৪ যাত্রী ও সিয়ামের ২ যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান। উভয় বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং অন্তত ২৫ যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানা, বড়াইগ্রাম থানা ও বনপাড়া ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহত যাত্রীদের বনপাড়া, নাটোর ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।

দুপুর ১২টার দিকে দুর্ঘটনায় আহত মোহনা আক্তার মিলি (২৬) নামে এক যাত্রীর বনপাড়ার আমেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের রুহুল আমীনের স্ত্রী।

ন্যাশনাল পরিবহনের যাত্রী আরইবির রাজশাহী বিভাগীয় তত্ববধায়ক (এসি) এনামুল হক বলেন, তিনি ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার জন্য বাসে ওঠেন। বনপাড়ার গাজী অটোরাইসমিল ও পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশন অতিক্রম করার সময় তাদের বাসটি সামনে থাকা একতা পরিবহনের একটি বাসকে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা সিয়াম পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই যাত্রীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যান।

যাত্রী এনামুল হক (৪৭) ও আক্তারী খানম (৪১) দম্পতি বলেন, গাড়ীটি অযথাই বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। অনেক যাত্রীর অনুরোধেও গতি কমান নাই চালক। অবশেষে দুর্ঘটনায় পড়তে হলো।

হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ামাত্র পুলিশ আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে ফায়ারসার্ভিস কর্মীদের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসাপাতালে পাঠিয়েছে। সড়কে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

খবর পেয়ে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছেন।

এসময় জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার করে টাকা এবং আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতার ঘোষণা দেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর