নাহিদ হত্যায় জড়িত কয়েকজনের হদিস নেই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকানকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় নাহিদ হোসেনকে হত্যায় সরাসরি জড়িত কয়েকজনের এখনো হদিস নেই। এ ঘটনায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীকে গ্রেফতার করা হলেও এখনো অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। এদের কারও কারও নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। রিমান্ডে থাকা পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদেও শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবুও তাদের ধরতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গোয়েন্দাদের তৎপরতা দেখে তারা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। অনেকে আবার বেশভূষা পরিবর্তন করেছেন। ফলে সহজেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না।

ডিবি সূত্র জানায়, নাহিদ হত্যায় জড়িতদের বড় একটি অংশকে শনাক্ত করেছে তারা। তবে যেহেতু সংঘর্ষে বহু শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ ছিল, তাই হত্যার স্থানের আশপাশের ফুটেজগুলো বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। রিমান্ডেও হত্যার আগে-পরের ঘটনার পরম্পরা জানতে চাওয়া হয়েছে গ্রেফতারদের কাছ থেকে। ঘটনার ইন্ধনদাতাদের বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের। এখানে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়েও চলছে তথ্য অনুসন্ধান। গ্রেফতার ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদের বিভিন্ন পর্যায়ে এ ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক নয় বলে দাবি করেছে। রিমান্ডের শেষ সময় পর্যন্ত এ বক্তব্যে অটল ছিল তারা। এছাড়া ফুটেজে আসা কয়েকজনের ছবি ছিল অস্পষ্ট। ফলে একাধিক উৎস থেকে এদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছেন গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে পাঁচ ছাত্রের থেকেও জানতে চাওয়া হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত দোকানকর্মী মোহাম্মদ মুরসালিনের হত্যার বিষয়েও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তারা।

জানতে চাইলে ডিবি রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী শনিবার সন্ধ্যায়  বলেন, ঢাকা কলেজের পাঁচ ছাত্রকে দুদিনের রিমান্ড শেষে রোববার (আজ) সকালে আদালতে নেওয়া হবে। রিমান্ডে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কাজ করছে ডিবি।

এর আগে নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষে কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান নাহিদ হোসেন হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে দুদিন করে রিমান্ডে নেয় ডিবি। বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৮ এপ্রিল রাতে নিউমার্কেটের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরদিনও চলতে থাকে সংঘর্ষ। সংঘর্ষের সময় একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারিম্যান নাহিদকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। ইটের আঘাতে আহত হন মোরসালিন নামের আরেক দোকানকর্মী। পরে দুজনই হাসপাতালে মারা যান। দীর্ঘসময়ের এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা করেছে পুলিশ।

আরেকটি মামলা করেছেন সংঘর্ষের দিন ভাঙচুর হওয়া অ্যাম্বুলেন্সের মালিক। এর মধ্যে হত্যা মামলা দুটির তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। বাকি তিন মামলায় নিউমার্কেট থানার পুলিশ তদন্ত করছে। সংঘর্ষের মামলায় নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন ছাড়া অন্য কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর