খুলনায় তরমুজ চাষিদের ৭৪ কোটি টাকা লাভের সম্ভাবনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খুলনার বটিয়াঘাটা ও দাকোপে এ বছর ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। বাম্পার ফলনের কারণে বিক্রির টার্গেট ধরা হয়েছে ৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে উৎপাদন ব্যয় ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর মুনাফার পরিমাণ ৭৪ কোটি ৪০ লাখ।

প্রতি বিঘায় ৩০ হাজার টাকা খরচ বাদে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন কৃষকরা। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজারে উঠবে এ তরমুজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনার বটিয়াঘাটা ও দাকোপে বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে তরমুজের চাষ হয়েছে। প্রতি বছর বাড়ছে আবাদ। লাভবান হচ্ছেন কৃষক। মাঠের পর মাঠ সবুজের সমরোহ। এর মধ্যে লাখ লাখ রসালো ও সুস্বাদু তরমুজ। চাষিরা পরিচর্যা ও সেচ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বীজ সার কীটনাশক ও সব ধরনের সরঞ্জমাদি বিনামূল্যে পেয়েছেন কৃষকরা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট কৃষকদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে। তাদের পরামর্শে কৃষকরা ঝুকছেন তরমুজ চাষে।

কৃষকরা জানান, তরমুজ চাষে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। বিক্রি হবে দেড়লাখ টাকা। সে হিসেবে খরচ হয়েছে ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা লাভের সম্ভাবনা।

জানা যায়, গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এসআরডিআই’র জিকেবিএসপি প্রকল্পের আওতায় তরমুজ করা হয়েছে। এ বছর বটিয়াঘাটার বিভিন্ন ইউনিয়নে ট্রে পদ্ধতি ও পলিব্যাগে চারা উৎপাদন করে রোপণ করা হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে খেত থেকে তরমুজ উত্তোলন করা হবে। এবছর ড্রাগন, পাকিজা, সুইট ড্রাগন ও বিগপাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে ট্রে ও পলিব্যাগে বীজ বপন করছেন এবং ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে মূল জমিতে রোপণ করেন। চারা রোপণের ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে তরমুজ উত্তোলন করা যায়। এই প্রকল্পের আওতায় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর, সুরখালি ও জলমা ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর ও  দাকোপ উপজেলার বাজোয়া, কৈলাশগঞ্জ, বানিয়াশান্তা, লাউডোব ও  তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। কৃষক তরমুজ চাষে লাভবান এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় প্রতিবছর আগ্রহ বাড়ছে।

গঙ্গারামপুর এলাকার কৃষক মো. হালিম হাওলাদার, ওমর আলী হাওলাদার ও ইব্রাহীম কাজী, বয়ারভাঙ্গা গ্রামের চাষি তন্মায় মন্ডল এবং দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা এলাকার কৃষক পলাশ বৈরাগী, বিভূতি মন্ডল ও মৃত্যুঞ্জয় মন্ডল বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ট্রে ও পলিব্যাগ পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। আগে চারা তৈরি করে ক্ষেতে রোপণ করলে দ্রুত বড় হয় এবং সময় কম লাগে। এতে আগে থেকেই ফসল কাটা যায়। ঝড় বৃষ্টি ও দুর্যোগ আসার আগেই ফসল বিক্রি করা যায়। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। বিক্রি হবে দেড় লাখ টাকা। এই প্রকল্প’র পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ, বীজ, সার ও নানা রকম উপকরণ বিনামূল্যে দেওয়া করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানব সম্পাদে পরিণত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করলে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদন হয়। কৃষকদের সার, বীজ প্রশিক্ষণসহ সব প্রকার সরঞ্জামাদি বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। চারা তৈরি করে রোপণ করলে ফসল আগে পাওয়া যায়। লবণাক্ততা আসার আগেই গাছ বেড়ে ওঠে। বৈরী আবহাওয়া আসার আগেই কৃষক ফসল বিক্রি করতে পারবেন। গত বছরের চেয়ে এবছর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর