কিশোরগঞ্জে দাওয়াতে এনে ১২ বছরের শিশুকে গণধর্ষণ, এক আসামি গ্রেপ্তার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জে দাওয়াত দিয়ে এনে ১২ বছরের এক শিশুকে গণধর্ষণের ঘটনায় মো. আতাউর রহমান আতিক (৪৮) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প। রোববার (৩ এপ্রিল) র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খান এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়।

শিশু গণধর্ষণ মামলার গ্রেপ্তার জেলার কটিয়াদী উপজেলার বাগবের গ্রামের মৃত সুন্দর আলীর ছেলে। এ মামলার অপর আসামি মো. আনিছ (৪৫) পলাতক রয়েছে। সে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বগাদিয়া মোল্লাপাড়া এলাকার মৃত সায়েমের ছেলে।

র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দূর সম্পর্কের আত্মীয়তার সূত্র ধরে মো. আনিছ তার ছেলের খৎনা উপলক্ষে মোবাইল ফোনে ভিকটিমের পিতাকে দাওয়াত দেয়। ভিকটিমের পিতা অসুস্থ থাকায় অপারগতা জানালে আনিছ ভিকটিম এবং তার বড় ভাই (১৫) কে পাঠানোর অনুরোধ করে।

সে অনুযায়ী আনিছ ওই শিশু ও তার ভাইকে আনার জন্য গত ২৮ মার্চ দুপুরে মো. আতাউর রহমান আতিক মোটর সাইকেলে করে ভিকটিমের পিতার বাড়ি কটিয়াদীতে যায় এবং বিকালে তাদের নিয়ে কিশোরগঞ্জে আনিছের বাড়িতে নিয়ে আসে।

আনিছ ওরফে আনাছ ও আতিকের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমের সাথে অসৎ কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রস্তূতি নিয়ে রাখে। আতিক বাচ্চাদেরকে নিয়ে আনিছের বাসায় গেলে আনিছ বাচ্চাদেরকে চেতনা নাশক ঔষধ মিশ্রিত দই ও মিষ্ট খেতে দেয়।

এই মিষ্টি ও দই খাওয়ার পরপরই বাচ্চা দুইটি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের জ্ঞান ফিরলে সে দেখতে পায়, আতিক তাকে ধর্ষণ করছে।

ভিকটিম এতে আপত্তি জানালে আনিছ তাকে ধারালো ছুরির ভয় দেখায় এবং আতিক ও আনিছ উভয়ই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।

পরবর্তীতে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে আতিককে তিন লাখ টাকা জরিমানা করে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আতিক টাকা পরিশোধ না করে এলাকা হতে পালিয়ে যায় এবং টাকা দিতে অসম্মতি জানায়।

অপরদিকে ভিকটিমের অবস্থা সংকটপন্ন হওয়ায় রুবেল নামে আতিকের একজন প্রতিবেশী তাকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।

পরবর্তিতে রুবেল ভিকটিমের পক্ষ হইতে আতিকের কাছে মোবাইল ফোনে জরিমানার টাকা দাবি করলে আতিক র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পে এসে অপহরণের একটি মিথ্যা অভিযোগ করে।

অপহরণের অভিযোগটি তদন্ত শুরু করলে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প গণধর্ষণের আলামত পায়।

এরই প্রেক্ষিতে রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুরে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খান এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া এলাকা থেকে মো. আতাউর রহমান আতিককে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় আতিক ও আনিছের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু দমন আইন ২০০০ সনের (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(৩) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামি আনিছকে ধরার জন্য র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর