ন্যাড়া পাহাড়ে সবুজের রাজ্য

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন ফরেস্ট রেঞ্জ এবং বিটে শত শত একর ন্যাড়া পাহাড় বনায়নে সাফল্য পেয়েছে বন বিভাগ। একসময় রক্ষিত এসব পাহাড় বৃক্ষশূন্য ধু ধু প্রান্তর থাকলেও এখন সেগুলো ভরে উঠেছে সবুজ বৃক্ষে। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ৫টি রেঞ্জে ১৫শ’ হেক্টর পাহাড়ে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় এনরিচমেন্ট এবং স্লো গ্রোয়িং বন বাগান করার সঙ্গে চলছে নার্সারি উত্তোলন।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নারায়ন হাট রেঞ্জের সুফল প্রকল্পের বাগান পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রকল্পের আওতাভুক্ত ন্যাড়া পাহাড়গুলোতে এখন সবুজের সমারোহ। সহস্র গাছ ও গাছের চারায় ভরপুর পাহাড়।

নারায়নহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা সুরজিৎ চৌধুরী রাইজিংবিডিকে জানান, এই রেঞ্জে প্রায় ২৫০ হেক্টর পাহাড়ে সুফল প্রকল্পের আওতায় দ্রুত বর্ধনশীল এবং স্লো গ্রেয়িং বন বাগান করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাগান সৃজনের লক্ষ্যে বন বিভাগের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তিতে নার্সারি উত্তোলন করা হয়েছে এবং এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

নারায়ন হাট রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, ২০২০-২০২১ সালে সুফল প্রকল্পের আওতায় রেঞ্জের আওতাধীন নারায়ণহট বিটে ১০ হেক্টর  স্লো গ্রোয়িং বাগান, বালুখালী বিটে ১৫ হেক্টর  এ.এন.আর.বাগান, একই আর্থিক সনে এনরিচমেন্ট ও স্লো গ্রোয়িং নার্সারী, দাঁতমারা বিটে ফাস্ট গ্রোয়িং নার্সারি, হাসনাবাদ রেঞ্জে সুফল প্রকল্পের  বিভিন্ন ক্যাটাগরির বাগান করা হয়েছে। এ ছাড়া, নারায়ন হাটে সর্বমোট ২৫০ হেক্টর পাহাড়ে ইতোমধ্যে সফল বনায়ন সম্পন্ন হওয়ায় ন্যাড়া পাহাড়গুলো এখন বৃক্ষরাজিতে ভরে উঠেছে। এসব বনায়ন ও নার্সারিগুলো সম্প্রতি পরিদর্শন করেছেন টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের সিনিয়র মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন স্পেশালিস্ট, সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক সফিউল আলম চৌধুরী।

সফিউল আলম চৌধুরী বলেন, সুফল প্রকল্পে ব্যাপক সাফল্য মিলছে পাহাড় বনায়নে। টেকসই বন এবং জীবিকা এই দুটো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই বন বিভাগের সুফল প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় আমরা যেমন পরিবেশ সংরক্ষণ, বন উন্নয়ন করতে পারছি, একই সাথে পাহাড়ে জীবন ও জীবিকাও সুনিশ্চিত হচ্ছে। চট্টগ্রামের নারায়ন হাট রেঞ্জ সুফল প্রকল্পের বাগান ও নার্সারির সাফল্য দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন বন বিভাগের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী বলেন, এই বন বিভাগের ৫টি রেঞ্জে প্রায় ৩০টি বন বিটে ১৫শ’ হেক্টর পাহাড়ে সুফল প্রকল্পের আওতায় বনায়ন করা হয়েছে। রেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে হাটহাজারী, নারায়ন হাট, করের হাট, কুমিরা এবং ইছামতি। সহকারী বন সংরক্ষক, রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং বিট কর্মকর্তাদের প্রত্যেক্ষ তত্ত্বাবধানে এসব বন বাগানের ফলে এক সময়ের ন্যাড়া পাহাড় এখন সবুজের সমারোহে ভরপুর। সফল বনায়ন এবং বনজ সম্পদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে নিশ্চিত করে উত্তর বন বিভাগীয় কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর