হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দয়রামপুর গ্রামের পদ্মার চরে অনুষ্ঠিত হলো শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া ও মহিষের গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে দয়রামপুর যুব সংঘের উদ্যোগে পদ্মার চর বালুর মাঠে এই প্রতিযোগিতা হয়। মাঠের চারদিকে বসে হাজার হাজার দর্শক এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।

রুহুল উদ্দীন স্বাধীনের ধারা বর্ণনায় প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ইকবাল সর্দার। প্রতিযোগিতার উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিলাইদহ রবীন্দ্র কলেজের শিক্ষক ফারুক আযম হান্নান।

প্রতিযোগিতায় প্রতিটি ঘোড়ার গাড়িতে চারজন ও মহিষ গাড়িতে চারজন অংশ নেয়। দয়রামপুরের সাহেব সর্দার মহিষের গাড়ি নিয়ে প্রথম ও একই গ্রামের আকাশ ইসলাম ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। প্রথমস্থান অধিকারীকে সোফাসেট ও দ্বিতীয়স্থান অধিকারীকে পাওয়ার ফ্যান পুরুস্কার দেওয়া হয়।

খাঁন ইলেকট্রনিকস এন্ড ডিজিটাল ফার্নিচারের সৌজন্যে প্রতিযোগীদের মাঝে এই পুরুস্কার দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে সান্ত্বনা পুরুস্কার দেয়া হয়।

ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে আসা দয়রামপুর এলাকার হাবিবুর রহমান বলেন, ঘোড়া ও মহিষের গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা খুবই কম হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন করার দাবি জানান তিনি।

পাশের গ্রাম মির্জাপুর থেকে প্রতিযোগিতা দেখতে আশা দর্শক গোলাপী আক্তার বলেন, ‘ঘোড়া ও মহিষের গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা আমি শুধু বইতে পড়েছি, আর মুরুব্বিদের মুখে শুনেছি। কিন্তু এই প্রথমবার দেখলাম, খুব ভালো লেগেছে।’

প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল পরিবহন করি। এই ঘোড়া থেকে আমার রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়। প্রতি বছর যদি এই ধরনের প্রতিযোগিতা হয়, তাহলে আমরা যারা গাড়িয়াল আছি, আমরা এই পেশায় অনুপ্রাণিত হবো।’

অপর প্রতিযোগী সোহেল বলেন, ‘ঘোড়া ও মহিষের গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আয়োজকদের পাশাপাশি আমাদের খরচ হয়। তারপরও আমার দাবি এ ধরণের ঐতিহ্যবাহী খেলা যাতে বার বার আয়োজন করা হয়, তাহলে আমাদের ঘোড়া লালন পালন ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহের সৃষ্টি হবে।’

আয়োজকদের একজন ইকবাল সরদার জানান, এখন থেকে প্রতি বছর এই ধরনের আয়োজন করা হবে।