ভৈরব-কুলিয়ারচরের দুই গ্রামবাসীর মধ্যে টেঁটা যুদ্ধ, আহত অর্ধশতাধিক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তৈরির জন্য মাটি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ভৈরব উপজেলার আকবরনগর ও কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের মাধবদী গ্রামবাসীর মধ্যে তিন ঘন্টার রক্তক্ষয়ী টেঁটা যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষে ৫০ জনেরও বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এ সময় বেশকিছু বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা যায়, কুলিয়ারচর উপজেলায় গৃহ ও ভূমিহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর মাটি ভরাটের জন্য দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সরকারি খাস জমির কুলিয়ারচর অংশ থেকে মাটি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত হয়।

এর প্রেক্ষিতে মাটি উত্তোলনের জায়গাটি নিজেদের উপজেলার দাবি করে সেখানে বাধা দেয় ভৈরব উপজেলার আকবরনগর গ্রামবাসী।

এ অবস্থায় রোববার (৩০ জানুয়ারি) সকালে দুই উপজেলার এসিল্যান্ডের জায়গা পুনঃনির্ধারণের কথা ছিলো।

কিন্তু এর আগেই দুই উপজেলার দুই গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষের একপর্যায়ে ভৈরব উপজেলার আকবর নগর গ্রামবাসী কুলিয়ারচর উপজেলার মাধবদী গ্রামে দেশীয় অস্ত্রসহ ঢুকে পড়ে।

এসময় তারা মাধবদী গ্রামের ৭/৮টি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটসহ মাটি উত্তোলনের ড্রেজার মেশিনের পাইপ ধ্বংস ও লুটপাট করে।

এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে।

পরবর্তীতে উভয়পক্ষের জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে ভৈরব-কুলিয়ারচরের সার্কেল এএসপি রেজওয়ান দিপু, কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী, এসিল্যান্ড আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও ভৈরব-কুলিয়ারচর থানার পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।

বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ওসি  সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সার্কেল স্যার সহ আমরা উপস্থিত হই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার  বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মাটি উত্তোলন ঘিরেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। আকবর নগরের জনগণ দাবি করছিলো, মাটি উত্তোলনের জায়গাটি তাদের সীমানায়। যদিও জায়গাটি কুলিয়ারচরের সীমানায় মেপেই মাটি উত্তোলনের সিদ্ধান্ত হয়।

এরপরও আকবরনগর গ্রামবাসী দাবির প্রেক্ষিতে আজ (রোববার, ৩০ জানুয়ারি) দুই উপজেলার এসিল্যান্ডের জায়গাটি পুনঃনির্ধারণের কথা ছিলো। কিন্তু এর আগেই দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর