হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভৈরবে তাকে বাউল ফকির নামে ডাকতো তার প্রতিবেশীরা। রেলওয়ে স্টেশনে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া সিরিয়াল কিলার সেলিম ওরফে হেলাল।

দেশের আলোচিত কিলার সেলিম ওরফে হেলাল একাধিক হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ৪ বছর যাবৎ ভৈরবে ছদ্মবেশে বসবাস করছিল। শুক্রবার এসব আলোচনা ছিল টক অব দ্যা টাউন।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে থাকাকালীন নিজের পরিচয় গোপন রেখে স্টেশনের খুদেজা বেগম ওরফে খুদি নামের ভিক্ষুকের সঙ্গে সংসার পাতে সেলিম। খুদেজার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল। তিনিও ভৈরব স্টেশনে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ভৈরব স্টেশনে সেলিমের সঙ্গে পরিচয় হলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের পর পৌর এলাকার পঞ্চবটি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে।

গত নভেম্বরে পঞ্চবটির বাসা ছেড়ে আমলাপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। প্রতিদিন সকালে স্ত্রী খুদেজা বাসা থেকে ভিক্ষার সন্ধানে বিভিন্ন এলাকায় চলে যেতেন আর সেলিম যেত রেলওয়ে স্টেশনে। সেখানে স্টেশন থেকে বিভিন্ন ট্রেনে চড়ে গান গাইতো আর মানুষের দেওয়া টাকা পয়সা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। এভাবেই চলছিল খুদেজা ও সেলিমের সংসার।

বুধবার সন্ধ্যায় সেলিম র‌্যাবের হাতে ধরা পড়লে স্টেশনে ছুটে আসেন স্ত্রী খুদেজা। জানতে পারেন তার স্বামী একজন কিলার। খবর শুনে অবাক হন খুদেজাসহ এলাকার মানুষ।

সেলিম হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি একথা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারেনি এলাকাবাসী। কিন্তু পরদিন বিভিন্ন টিভিতে র‌্যাবের ব্রিফিং দেখে ভুল ভাঙে তাদের।

ভৈরব স্টেশনে একাধিক লোকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সেলিম অত্যন্ত নিরব জীবনযাপন করতো। কারো সঙ্গে তেমন কোনো কথা বলতো না। হাঁটতো আর গান গাইতো। বেশভুষায় আধ্যাত্মিক সেলিম বাউল গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো।

সরেজমিনে সেলিমের ভাড়াবাসায় গেলে বাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। বাসার মালিক আবুতাহের জানান, আমরা বাউলকে ফকির নামে ডাকতাম। তার প্রকৃত নাম জানতাম না। আড়াইমাস আগে বাসা ভাড়া নিয়ে ফকির আমার এখানে আসে।

বাসার পাশে চায়ের দোকানদার জানান, এত বড় খুনি আমাদের পাশে থাকতো তা আমরা জানতামই না।

২০০১ সালে বগুড়ার চাঞ্চল্যকর মাহমুদুল হাসান বিদ্যুৎ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হেলাল ওরফে সেলিম ফকির। এছাড়াও সে আরও ২টি হত্যা মামলায় জড়িত থাকার কথা র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছে বলে র‌্যাব সূত্রে জানা যায় ।