মেহেদির রং না মুছতেই লাশ হলেন সুমাইয়া

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২৬ দিন আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় সুমাইয়ার (১৯)। সুমাইয়া খুঁজে পেয়েছিল নতুন এক পরিবার। পেয়েছিল নতুন মা-বাবা, ভেবেছিল নতুন সংসারে গুছিয়ে নেবে সবকিছু। দুর্ভাগ্য ভাবনাগুলো তার ভাবনাই হয়ে থাকল, হাতের মেহেদির রং মুছার আগেই লাশ হতে হলো নববধূ সুমাইয়াকে। বৈদ্যুতিক তারে শক লেগে সুমাইয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে সুমাইয়ার বাবা কায়েম আলীর দাবি যৌতুকের কারণে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তার মেয়েকে। ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মেটন গ্রামে।

গত মঙ্গলবার সকালের দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বিকালের দিকে মারা যায় সুমাইয়া। জেলার মিরপুর উপজেলা হরলা মেটন গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাকিবুল ইসলামের সঙ্গে গত বছর ১৬ ডিসেম্বর বিয়ে হয় সুমাইয়ার। ঘটনার পর বুধবার সুমাইয়ার স্বামী ও শাশুড়ির নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে বিয়ের দুই দিন সাকিবুল জানায়, তার টাকার খুব দরকার। ব্যবসা করার জন্য টাকার জন্য সুমাইয়াকে চাপ দেয়। সুমাইয়া তার বাবার কাছে টাকাও চায়, কিন্তু সুমাইয়ার বাবা গরিব হওয়ায় ব্যবসার সম্পূর্ণ টাকা দিতে অপরাগত প্রকাশ করে। এ নিয়ে সুমাইয়ার স্বামী তার ওপর নির্যাতন চালায়। এরপর বেশ কয়েক দিন ধরে যৌতুকের টাকার জন্য বকাবকি করে সুমাইয়াকে বাবার বাড়িতে পাঠায়। চার দিন বাবার বাড়িতে থেকে কিছু টাকা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসে। স্বামীর বাড়িতে আসার পর সম্পন্ন টাকা না দেওয়ার কারণে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তাকে গালমন্দ ও মারধর করে।

সুমাইয়া পরিবারের লোকজন জানান, সুমাইয়ার পরিবারের কাছে দাবি যৌতুকের এক লক্ষ টাকা না পেয়ে গত মঙ্গলবার সকালে সুমাইয়ার স্বামী সাকিবুল পরিকল্পিতভাবে সুমাইয়ার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়দের সহযোগীতায় আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়াকে মামা জালাল আলী কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে এ বিষয়ে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা পলাতক আছে।

সুমাইয়ার মামা বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।

সুমাইয়ার ভাই রাশিদুল ইসলাম বলেন, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি আমার বোনকে হত্যার দায়ে তার স্বামী সাকিবুল ও শাশুড়ির নামে থানায় মামলা দিয়েছি।

মিরপুর থানার ওসি শুভ্র কান্তি দাস বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে সুমাইয়ার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা হয়েছে। স্বামীসহ দুজনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামি সাকিবুলের মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর