কুমিল্লার ঘটনায় অভিযুক্ত ইকবাল কক্সবাজারে আটক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখা ইকবাল হোসেন নামক সেই যুবককে শনাক্ত করে আটকও করা হয়েছে! কারা ইন্ধন দিয়েছিল তা শনাক্ত করতে ঐ যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা অনুসন্ধান করছে। তারা এটা নিশ্চিত হয়েছে যে, কুমিল্লার ঘটনাটি পরিকল্পিত। এর ধারাবাহিকতায় পীরগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। কোনো কোনো স্থানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এসব হামলার পরিকল্পনকারী ও জড়িতরা শনাক্ত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলায় এ পর্যন্ত শতাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৬ শতাধিক। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মণ্ডপে হামলার ঘটনায় ১০ মামলায় ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই জন সরাসরি হামলার অন্যতম নির্দেশদাতা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

কুমিল্লার ঘটনায় সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঐ যুবক ইকবাল হোসেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়। সে কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা নুর আহমেদ আলমের ছেলে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের বাসাবাড়ির অন্তত ১২টি সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে মণ্ডপে কোরআন রাখা যুবক ইকবাল হোসেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত টিম। দুপুরে পুলিশের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি নগরীর নানুয়া দীঘিরপাড়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এর আগে ?বুধবার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখার ঘটনায় ইকবালের নাম প্রকাশের পর মিডিয়াকর্মীসহ স্থানীয়রা তার বাড়িতে ভিড় জমায়।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, শনাক্ত ইকবাল হোসেন (৩৫) কোথা থেকে পবিত্র কোরআন সংগ্রহ করেছেন, কারা সরবরাহ করেছে কিংবা কে ইন্ধন দিয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার আগে ও পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের ভবনের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, গভীর রাতে একজন যুবক বই আকৃতির কিছু একটা হাতে নিয়ে পাশের দারোগাবাড়ি মাজার গেট থেকে পুকুরপাড় দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। অপর একটি সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, হাতে হনুমানের গদা কাঁধে নিয়ে ঐ যুবক দীঘিরপাড়ে ঘোরাফেরা করছেন। তবে মণ্ডপে সিসি টিভি না থাকায় কোরআন শরিফ রাখার চিত্র দেখা যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছে, ইকবাল ভবঘুরে জীবনযাপন করত। প্রায়ই সে নেশা করত। তাই ঘটনার রাতে মণ্ডপে কোরআন রাখতে সে নেশার প্রলোভনে করতে পারেন। এদিকে সিসি টিভির ফুটেজে দারোগাবাড়ি মাজারের বিষয়টি এখন আলোচনায়। নানুয়া দীঘির পাশেই দারোগাবাড়ি মাজার। এই মসজিদের বারান্দায় মুসলিমদের তেলাওয়াতের জন্য রাখা থাকে বেশ কয়েকটি কোরআন শরিফ। ইকবাল সেখান থেকে মণ্ডপে কোরআন নিয়ে ছিল কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে দারোগাবাড়ি জামে মসজিদের পেশ ইমাম ইয়াছিন নূরী বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি আমি শুনেছি। কোরআন শরিফ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে ভবিষ্যতে এভাবে আর কোরআন উন্মুক্ত রাখা হবে না। তিনি আরো বলেন, মণ্ডপে যে কোরআন পাওয়া গেছে তা নতুন, এমন কোরআন শরিফ তাদের সংগ্রহে ছিল না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর