পায়রা সেতু উদ্বোধন রোববার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পায়রা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সারা দেশের সাথে সরাসরি সড়কপথে সংযুক্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে সেতুটি যানবাহন চললাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। কুয়েত উন্নয়ন তহবিল এবং ওপেক তহবিলের সাথে বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ৪ লেনের এ সেতুটি নির্মাণের ফলে দ্বীপজেলা ভোলা বাদে দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি জেলাই সারা দেশের সাথে সড়ক পথে সরাসরি যুক্ত হতে যাচ্ছে। এর ফলে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় বরিশাল থেকে পৌঁনে দুই ঘণ্টায় এবং পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকা থেকে ৭ ঘণ্টায় পৌছান সম্ভব হবে। এমনকি কুয়াকাটার দূরত্ব ঢাকা থেকে কক্সবাজারের অর্ধেকে হ্রাস পাবে।

‘এক্সট্রা ডোজ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার’ ধরনের এ সেতুটির নকশা অনেকটা চট্টগ্রামের দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতুর আদলে করা হয়েছে। মূল সেতুটি বক্স গার্ডার ছাড়াও স্টে-ক্যাবলের ওপর স্থিতিশীল থাকছে।
বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা/ বরগুনা মহাসড়কের ২৬তম কিলোমিটারে লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ পায়রা সেতুটি নির্মাণে বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকেও ৩৬৮.২৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ফুটপাথসহ ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থ চার লেনের মূল সেতুটি পায়রা নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ৬০ ফুট উচ্চতায় নির্মিত হয়েছে। সেতুটির সাথে ১ হাজার ২৬৮ মিটার সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজা ও প্রশাসনিক ভবনও নির্মিত হয়েছে।
 ২০০৫-০৬ অর্থবছরে লেবুখালীতে প্রস্তাবিত এ সেতু নির্মাণে কুয়েত উন্নয়ন তহবিলের সাথে প্রথম সমঝোতায় সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারিত হলেও পরবর্তিতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে প্রায় দেড় হাজার কোটিতে উন্নীত হয়েছে। এমনকি ২০১২ সালের ৮ মে একনেক সভায়ও ২০০৫-০৬ সালের প্রকল্প ব্যয় সম্বলিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে দরপ্রস্তাবে সর্বনিম্ন দর দাতার প্রস্তাবটি ছিল ১ হাজার ২শ’ কোটি টাকার ওপরে। প্রায় দশ বছর আগের মূল্যহারে চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানসহ অন্য দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র দাখিল করেনি। ফলে সড়ক অধিদফতর ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কুয়েতের অনুমোদন নিয়ে মূল্যহার সংশোধন করে চীনা সর্বনিম্ন দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবনা গ্রহণ করে। কিন্তু ২০১৭ সালের জুনে ও ’১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরো দু’দফায় লেবুখালী সেতুর সংশোধীত ডিপিপি একনেকে অনুমোদনের পরে সেতুটির জন্য প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। একাধিক ঘূর্ণিঝড় ও করোনা মহামারীর কারণে পায়রা সেতুটির নির্মাণ কয়েক দফা পিছিয়ে গিয়ে গত মাসেই এর কাজ শেষ হয়েছে।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর