অভিনব কায়দায় পাখি দিয়েই পাখি শিকার!

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বানের পানি নেমে যাওয়ায় প্রতিদিন চলনবিলজুড়ে চলছে অভিনব কায়দায় নির্বিচারে পাখি শিকার। বিষটোপ, জাল এবং কলাপাতার ঘর ও বিশেষ ফাঁদ পেতে নির্বিচারে বক, কাদাখোঁচা, রাতচোরা, শালিকসহ নানা প্রজাতির পাখি শিকার করছেন এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা। রাতে এবং ভোরে শিকার করা এসব পাখি প্রকাশ্যে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রিও করছেন তারা। এভাবে পাখি শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি করা হলেও এ বিষয়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন।

গুরুদাসপুর পৌর সদরের দুখাফকিরের মোড় এলাকার একটি ফসলের খেতে সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বানানো ডাংয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে শিকারি বক। ডাংয়ের সেই বক-ই মূলত শিকারির পাখি শিকারের প্রধান অস্ত্র। বেতের আর কলাপাতা দিয়ে বানানো হয়েছে পাখি শিকারের ঘর। শিকারি বকের ডানা ঝাঁপটানো দেখে আশপাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বক এসে পড়ছে সেই ঘরে। ঘরে লুকিয়ে থাকা শিকারিরা এসব বক ধরে ধরে খাঁচায় ভরছেন। প্রতিদিন ভোর বেলায় এভাবেই নির্বিচারে পাখি শিকার করছেন এক শ্রেণির অসাধু শিকারিরা।

স্থানীয়রা বলছেন, বানের পানি নেমে যাচ্ছে। কাদা-জলে ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছ দেখা যাচ্ছে। সেসব মাছ খেতেই চলনবিল এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে বকসহ নানা অতিথি পাখি। বিল জলাশয়ে পাখির এমন অবাধ বিচরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন এসব অসাধু শিকারিরা।

তারা আরও জানান, গুরুদাসপুরের পাঁচশিশা বিলে, কাছিকাটা, মশিন্দা, ধারবারিষা, চাঁচকৈড় মধ্যম পাড়া বিলসহ সিংড়া, তাড়াশ, চাটমোহর, পাবনা ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পরিযায়ি এসব পাখি শিকার করা হচ্ছে। গুরুদাসপুরের শাহীন আলম, শফিক, রাকিব হোসেন ও আব্দুল হান্নান প্রতিদিন ফাঁদ পেতে বক শিকার করছেন। শিকার করা এসব পাখি এক জোড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসব পাখি শিকারিরা জানান, পাখি শিকার করা যে, অপরাধ তা তারা জানেন না।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে পাখি শিকারিদের জন্য ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। শিকার বন্ধে গত বছর নানা সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু এ বছর জনবলসংকটের কারণে সেই প্রচারণা বন্ধ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর