কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে যাচ্ছে সূর্যমুখী ফুল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের বাসাইলে বহু কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে যাচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। সড়িষা ও সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখী বীজ থেকে প্রাপ্য তেলের দাম বাজারে অনেক বেশি এবং পুষ্টির দিক থেকেও ভালো। এছাড়াও কম খরচে অধিক লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। ফলে কৃষক পর্যায়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষে ধীরে ধীরে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারনা করা হচেছ।

বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে , উপজেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে প্রথম বারের মতো পরীক্ষা মূলক ভাবে ৫ জন কৃষকের মাঝে বীজ বিতরন করা হয়েছি। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাসাইল উপজেলায় ৩৫০ জন কৃষকের মাঝে সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিতরন করা হয়। এর মধ্যে পূর্নঃবাসন কর্মসূচীর আওতায় ৩০০ জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি করে বীজ এবং প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় ৫০ জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি করে বীজ এবং ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূলে বিতরন করা হয়েছে। এবছর উপজেলায় হাইব্রিড জাতের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। সদর ইউনিয়ন সহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষক পর্যায়ে প্রায় ৪৭ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখীর বীজ বপন করা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমি হতে প্রায় ২.১ মে.ট্রন করে মোট ৯৯ মে.ট্রন সূর্যমুখী বীজ সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ হতে ফুল চাষে কৃষক পর্যাযে সর্বোচ্চ সহযোগিতাও প্রদান করা হচ্ছে। সবকিছু সাভাবিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে বলে জানা যায়।

উপজেলার পূর্বপৌলি গ্রামের কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথম বারের মতো সূর্ষমুখী ফুলের চাষ করেছি। আশা করি সড়িষার থেকেও বেশি লাভবান হবো। এই ফুলের চাষে খরচ একেবারেই কম। প্রক্রিয়াকরন করাটাও খুব সহজ। এজন্য অনেকেই আগামি বছরে সূর্ষমুখী ফুলের চাষে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে। এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। চারিদিকে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছে সে এক অপরুপ দৃশ্য। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিয়াসু মানুষ সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত দেখতে আসছে।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, এই ফসলটি বাসাইল উপজেলার চাষীদের জন্য সুখবর বয়ে আনতে যাচ্ছে। খুব অল্প টাকায় বেশি মুনাফা সম্ভব এই চাষের মাধ্যমে। এই ফুলের বীজ থেকে আমরা যে তেল পাবো সেটায় ক্ষতিকর কলেস্টেরল নেই। পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী ফুল চাষের জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।

সূর্যমুখীর হাসিতে রঙিন কৃষকের মুখ | 879549 | কালের কণ্ঠ | kalerkantho

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিসার নাজনীন আক্তার জানান, এ উপজেলায় দ্বিতীয়বারের মতো পূর্নঃবাসন ও প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সূর্যমুখী বীজ ও সার সহায়ক হিসেবে দেয়া হয়েছে। দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতে এ ফুলের চাষ করা হয়েছে। এ সূর্যমুখী ফুল থেকে উৎপাদিত তেলে ৪০ ভাগ লিনোলিক এসিড থাকে যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ভালো। এ ফুল থেকে তেল উৎপাদন করতে পারলে দেশের মানুষের ভোজ্য তেলের যে চাহিদা তা এই ফুলের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে পারলে মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত তেল খেতে পারবে। এ ফুল চাষে চাষি লাভবান হবেন বলেও আশা করেন তিনি। ইতিমধ্যেই অনেক কৃষক এ সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর