চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলসংযোগ প্রকল্পে এখনো ভূমি জটিলতা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলসংযোগ স্থাপন প্রকল্পের কাজে এখনো বড় অন্তরায় ভূমি উদ্ধার জটিলতা। ব্যক্তি মালিকানাধীন কিছু ভূমি, মামলা ও মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় এখনো প্রকল্পের কাজের আওতায় আনা যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ফলে কাজের স্বাভাবিক গতির ক্ষেত্রে এই জটিলতাই প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি শুরু হওয়া প্রকল্পটির চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলট্র্যাক নির্মাণের জন্য ভূমি উন্নয়ন এবং ব্রিজ-কালভার্টসহ অবকাঠামো নির্মাণই প্রধান কাজ বলে জানান কর্মকর্তারা। তারা জানান, ট্রান্স-এশিয়ান রেল কানেক্টিভিটির আওতায় মিয়ানমারে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এই প্রকল্পেরই অংশ রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে গুনদুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলট্র্যাক স্থাপনের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলসংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, কিছু কিছু ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা এবং জমির মালিকানা নিয়ে বিষয়গুলো আদালত পর্যন্ত যাওয়ায় অল্পকিছু ভূমি এখনো প্রকল্পের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। রেলট্র্যাকের জন্য ভূমি উন্নয়নই মূল কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্পের আওতায় ১ শতাংশ ভূমি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বাকি রয়েছে। জটিলতা নিরসন না হলে অধিগ্রহণকৃত ভূমির মূল্যও স্থানীয় প্রশাসন প্রকৃত ভূমি মালিককে হস্তান্তর করতে পারছেন না। তিনি জানান, ১ হাজার ৩৬৫ একর ভূমি এই প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণকৃত ভূমির মালিকদের আর্থিক মূল্য গত ২০১৬ সালেই প্রকল্প থেকে সরকারের স্থানীয় প্রশাসনকে হস্তান্তর করা হয়। এই লক্ষ্যে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঐ সময়েই হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান আরো বলেন, এ মুহূর্ত পর্যন্ত মূল প্রকল্পের কাজের ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আমরা আগামী এপ্রিল মাস থেকেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলট্র্যাকের কাজে হাত দিতে পারব বলে আশা করছি। ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ট্র্যাক নির্মাণ শুরু হলে প্রকল্পের কাজ বর্ধিত টার্গেট টাইম ২০২২ সালের ডিসেম্বরেই শেষ করা যাবে বলে আশা করা যায়। বাকি থাকবে রামু থেকে গুনদুমের ২৮ কিলোমিটার। ঐ সময় থেকেই আশা করি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়ে যাবে। তবে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতাগুলো যদি শিগগিরই শেষ না হয়, তাহলে প্রকল্পের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অংশের সমাপ্তির বিষয়টি আরো কিছুদিন বিলম্বিত হতে পারে।

উল্লেখ্য এই প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয়ের ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এডিবি প্রদান করছে। ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি উন্নয়নের খরচ বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। এই প্রকল্পের সর্বমোট ব্যয় বা সর্বমোট প্রাক্কলিত খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর