জনগণকে বৃষ্টির পানি ব্যবহারে উৎসাহিত করার পরিকল্পনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই, ২০২০-জুন থেকে ২০২৫) দলিলের চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করেছে সরকার। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বিভিন্ন সেক্টরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতি পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের কৃষি ও পানিসম্পদ খাতে নানা কৌশল (চলমান) নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এই খাতে অনেগুলো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেমন নদী ব্যবস্থাপনা নদীর তীর সংরক্ষণ, বাঁধ নির্মাণ, স্মার্ট ড্রেজিং, সংযোগ পুনরুদ্ধার এবং পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো তৈরি ও উন্নয়ন করা হবে।

তিনি বলেন, পানি ধরে রাখার জন্য জলাধার সংরক্ষণ, প্রশস্তকরণ ও পুনঃখনন করা হবে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, জীবিকা এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্য পানির গুণমান বজায় রাখা হবে। নতুন সৃষ্ট চর অঞ্চলগুলিতে নদী, মোহনা ও ভূমি পুনরুদ্ধার ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হবে।

ড. শামসুল আলম আরো বলেন, হাওড় এবং আকস্মিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন এবং ঝুঁকিগ্রস্ত কমিউনিটিকে সুরক্ষা প্রদান করা, বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চল সেচ কার্যক্রমে ভূ-পৃষ্ঠের পানি ও বৃষ্টির পানি ব্যবহারে জনগণকে উত্সাহিত করা হবে।

এছাড়া বন্যা সতর্কীকরণ ব্যবস্থার জোরদারকরণ, জলজ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা খাতে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদারকরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

ড. শামসুল আলম বলেন, দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীতব্য চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম পরিকল্পনা হচ্ছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিণির্মানে দেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।

এ পরিকল্পনা প্রণয়নে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অভিজ্ঞতা এবং অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ হাজার ৯৫৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন টাকা। এরমধ্যে- ক) সরকারি খাত হতে অর্থায়ন ১২ হাজার ৩ শত ১ দশমিক ২ বিলিয়ন টাকা (১৮.৯ শতাংশ) এবং খ) ব্যক্তিখাত হতে অর্থায়ন ৫২ হাজার ৬ শত ৫৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন টাকা (৮১.১ শতাংশ)।

অর্থ সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা- অভ্যন্তরীণ উৎস হতে অর্থায়ন ৫৭ হাজার ৪ শত ৮৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা (৮৮.৫ শতাংশ) এবং বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়ন ৭ হাজার ৪ শত ৭৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা (১১.৫ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে।

ড. শামসুল আলম বলেন, বছরে গড় জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশ হারে ও মেয়াদান্তে (২০২৫ সালে) হবে ৮.৫১ শতাংশ। মেয়াদান্তে (২০২৫) দারিদ্রের হার ১৫.৬ শতাংশে ও অতি দারিদ্রের হার ৭.৪ শতাংশে দাঁড়াবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ১১.৩৩ মিলিয়ন। যার মধ্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে ৩.২৫ মিলিয়ন এবং শ্রমবাজারে যুক্ত হবে ৭.৮১ মিলিয়ন শ্রমশক্তি, কর-জিডিপি’র অনুপাত ১২.৩ শতাংশ, মেয়াদান্তে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৭৪ বছর, ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা এবং মেয়াদান্তে ৩০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর