নেত্রকোনায় গ্রামবাসী মিলে সাড়়ে তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ

বিজয় দাস নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নে  মল্লিকপুর গ্রামে সাড়ে তিন কিলোমিটারের মতো মাটির সড়ক রয়েছে। তবে এই সড়কটি দেড় যুগের বেশি সময় ধরে অবহেলিত রয়ে গেছে। অবশেষে মল্লিকপুরের বাসিন্দারা মিলে সড়কটি সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার পথে।

এই সড়কপথে মল্লিকপুর, ধারাম, তেলিকুড়ি, চন্দ্রপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার লোক যাতায়ত করে। শুকনো মৌসুমটা পায়ে হেঁটে কোনভাবে পার করতে পারলেও বর্ষায় লোকজনের কষ্টের সীমা থাকে না। নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার করা, উৎপাদিত পণ্য বাজারে নেয়া, বয়স্ক বা ডেলিভারি সক্রান্ত কোন জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

বারহাট্টা উপজেলাটি যখনি স্থানীয় বা জাতীয় নির্বাচন আসে তখন প্রার্থীদের কাছে এলাকার মানুষের একটাই দাবি থাকে যেন এই সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। প্রার্থীরাও গ্রামের মানুষের সরলতার সুযোগ নিতে ওয়াদা দেন, মানুষ চোখ বন্ধ করে ভোট দেন। কিন্তু জিতে গিয়ে সব ওয়াদা ভুলে যান জনপ্রতিনিধিরা। এভাবে কেটে গেছে দেড় যুগ, পার হয়েছে কত নির্বাচন। তিবু রাস্তা যেমন ছিল, তেমনি আছে, কোন উন্নয়ন হয়নি।

অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মল্লিকপুর গ্রামের লোকজন মিলে গ্রামের সড়কটি নির্মাণে লেগে পড়ে। শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় গ্রামের প্রায় আড়াইশ লোক মিলে মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ করছেন।

এ বিষয়ে  সড়ক নির্মাণে উদ্ধুদ্ধকারী লালন বখত মজুমদার বলেন, এই একটি সড়কে বছরের পর বছর ধরে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়কটা পাকা করে দেবে সেই আশায় এতটা বছর ধরে যত চেয়ারম্যান-এমপি হয়েছেন তাদের ভোট দিয়েছি। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। শেষে বাধ্য হয়ে আমরা নিজেরাই চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে সড়কটি বানাচ্ছি। প্রায় একমাস যাবত আমরা প্রায় আড়াইশো মানুষ মিলে সড়কে মাটি কাটছি।

সড়কে মাটি কাটছেন সাবেক মেম্বার রিয়াজ উদ্দিনও। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধিদের জন্য অনেক অপেক্ষা করেছি। ধৈয্যের বাঁধ ভেঙে গেছে, তাই গ্রামের লোকজন মিলেই কাজ শুরু করেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রার্থীরা পাশ করার পর তা ভুলে যান। তারাএখনো তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। কথা দিয়েছিলেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চনও। এমনকি নির্বাচনের আগে ভোট নেয়ার জন্য গ্রামবাসীর আস্থা অর্জ নে লোকজন দিয়ে পুরো সড়কটিতে ফিতা টেনে মাপামাপি করেছিলেন তিনি। পাশ করার পর অন্য সবার মতো তিনিও ভুলে যান সব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর