প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাচ্ছেন না ভূমিহীন অসহায় এক বীরমুক্তিযোদ্ধা

বিজয় দাস নেত্রকোনাঃ নিজের কোন জমি  না থাকার কারণে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর তা পাচ্ছেন না নেত্রকোনার এক অসহায় বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হামিদ।যার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং ১২৭৬৪৯, মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং ৫৭৫৩। একাত্তরে ৫ নং সেক্টরে থেকে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

নেত্রকোণা সদর উপজেলার সিংহের বাংলা ইউনিয়নের রায়দুম রুহী গ্রামের মৃত ছোবান তালুকদারের সন্তান আব্দুল হামিদ।তিনি বর্তমানে নেত্ররোনা শহরের সাতপাই রেলক্রসিং এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
ছেলে আমিনুল ইসলাম টিপু জানান ,তার বাবা আব্দুল হামিদের নিজ সম্পদ তার নিজ ভাই এবং চাচাত ভাইয়ের দিকে ভাতিজাদের দখলে থাকায় কোনভাবেই পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ দখলে নিতে পারছেন না তাই অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং সেনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় দিনযাপন করছেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রাপ্ত ভাতা দিয়ে বাসা ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিলসহ সংসারের বিভিন্ন খরচ চালানো খুব কষ্টকর। তার ছেলে টিপু ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে কোন রকমভাবে চলছে তার পরিবারটি।

তার ছেলে তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে  নেত্রকোণা আদালতে মামলা করেছেন।  মামলার বিবরণ ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আব্দুল হামিদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে জানা যায়, আব্দুল হামিদের চাচাত ভাই আব্দুল গণি মাষ্টারের সন্তান মজিবুর রহমান, মিজানুর রহমান, মো. সেলিম, মো. বজলুর রহমান, মো. স্বপন, মো. জুয়েল, মো. ভুলু ও মো. আপেল গংদের দখলে রয়েছে রায়দুম রুহী মৌজায় থাকা তার সহায় সম্পদ। আরও জানা যায়, বিগত প্রায় ৪০ বছর আগে আব্দুল হামিদের পিতা মারা যান।

পিতার মৃত্যুর পর আব্দুল হামিদ বাড়িতে না থাকায় জমিগুলো চাচাত ভাইদের দখলে চলে যায়। চাচাত ভাই আব্দুল গণি মাষ্টার ও আঃ আজিজ তালুকদার সুযোগ বুঝে তাদের নামে এককভাবে রেকর্ড ভুক্ত করে নেন। এমতাবস্থায় সহায় সম্বল হারানো আব্দুল হামিদ পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত পেতে সহকারি কমিশনার (ভূমি), নেত্রকোণা সদর, ময়মনসিংহ সেনানিবাস ৮ বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর অধিনায়ক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নেত্রকোণা সদর বরাবরে অভিযোগ, আবেদন, নিবেদন করেও সুরাহা করতে ব্যর্থ হন।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার এ করুণ পরিনতি মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। তার জীবধ্বসায় সে যেন মাথা গোঁজার ঠাঁই পান সরকারের কাছে এই দাবি জানান তার পরিবারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর