শিশু শ্রমিক নাহিদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা দিতে রিট

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় শিশু হাসান নাহিদের (১০) হাতের কুনই কাটার ঘটনায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে পাঁচ সচিব, ডিসি, পুলিশ সুপারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি (রিট-নং ৯৯৫৮/২০২০) করেন শিশু নাহিদের বাবা মো. নিয়ামুল হোসেন (আনোয়ার)। ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টের রেজিস্টারের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করার আদেশ দিয়েছেন।

মামলার দুজন বিবাদী ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের আদেশটি অফিসিয়ালভাবে পেয়েছেন বলে তারা যুগান্তরকে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার হাজী ইয়াকুব আলীর ওয়ার্কশপের মেশিনে হাসান নাহিদ (১০) নামের এক শিশুর হাত কুনই পর্যন্ত কেটে যায়।

পরে চিকিৎসকরা জীবন বাঁচাতে শিশুটির ডান হাতের কুনই পর্যন্ত কেটে ফেলেন। শিশুটির চিকিৎসায় ঢাকার একটি হাসপাতালে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা বিল হয়।

দরিদ্র বাবা নিয়ামুল হোসেন হাসপাতালের বিল দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করলেও বাকি টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারেননি। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও শিশুটিকে ছাড়পত্র দিচ্ছে না বলে শিশুর বাবার অভিযোগ।
শিশুটির বাবার বাড়ি আশুগঞ্জের আড়াইসিধা গ্রামে। তবে তারা ভৈরব শহরের ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ওয়ার্কশপ মালিক ইয়াকুব আলীর ম্যানেজার রাজু মিয়া জোর করে শিশুটিকে মেশিন চালাতে বাধ্য করলে ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় পরে শিশুর বাবা ভৈরব থানায় ওয়ার্কশপ মালিকসহ  পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। তার পর গত ২৭ ডিসেম্বর শিশুর বাবা দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২১ জনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করলে গত ১৪ জানুয়ারি আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

রিট পিটিশনে যাদের বিবাদী করা হয় তারা হলেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ, পুলিশের আইজিপি ও ডেপুটি আইজিপি, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জন, ঢাকার আল- বারাকা হাসপাতালের এমডি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জ, ওয়ার্কশপ মালিক, ম্যানেজার ও তাদের তিন কর্মচারী।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ (বিপিএম/বার) আদালতের আদেশটি পেয়েছেন স্বীকার করে জানান, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা বিষয়টির সত্যতা যাচাইপূর্বক ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অফিসিয়ালভাবে যথাসময়ে দাখিল করব।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে আইন অনুযায়ী আদালতের নির্দেশ পালন করব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর