বর্ষা শেষে বিলে মাছ ধরার উৎসব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্ষা শেষে বিলের পানি কমে যাওয়ায় নড়াইলের বিভিন্ন খাল-বিলে চলছে দেশি প্রজাতির মাছ ধরার উৎসব। কেউ পোলো দিয়ে, আবার কেউ জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে এসব মাছ ধরছে। শোল, টাকি, কৈ, মাগুর, রুই কাতলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরতে পেরে খুশি এসব মাছ শিকারিরা। তবে আগের তুলনায় মাছ কমে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মাছ শিকারিরা।

দেশি প্রজাতির মাছের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নড়াইল জেলা। এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি, চিত্রা, নবগঙ্গা, কাজলা নদীসহ অসংখ্য খাল-বিল রয়েছে। এসব নদী খাল বিলে মিঠা পানি প্রবাহিত হওয়ায় দেশি প্রজাতির মাছের প্রজনন ভাল হয়। যার কারণে ইছামতি বিল, চাচুড়ির বিল, কাড়ার বিল, নলামারা বিলসহ অসংখ্য বিলে দেশি প্রজাতির শোল, টাকি, মাগুর, সিং, কৈসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। বর্ষা শেষে এসব বিলে শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সৌখিন ও পেশাদারী মাছ শিকারিরা নেমে পড়েন মাছ ধরতে। যা অনেকটাই উৎসবে পরিণত হয়।

নড়াইল পৌরসভার বিজয়পুর এলাকার সৌখিন মাছ শিকারি আনিচুর রহমান বলেন, এক সময়ে অনেক মাছ পাওয়া গেলেও এখন একেবারেই কমে গেছে। বিভিন্ন বিলের নিচু এলাকায় ঘের তৈরি হওয়ায় মাছের আশ্রয়স্থল নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া আগের মতো পানি না হওয়ায় মাছ কম পাওয়া যায়। তাছাড়াও ধানে বিষ প্রয়োগ, মা মাছ নিধনসহ বিভিন্ন কারণে মাছের প্রজনন কমে গিয়েছে। দেশি প্রজাতির এসব মাছ রক্ষায় বিভিন্ন বিলে অভয়াশ্রম তৈরি করা প্রয়োজন।’

সদরের সীমাখালী গ্রামের রুবেল সরদার বলেন, ‘বর্ষা শেষে বিলে হাটু পানি থাকায় পোলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে আমরা মেতে উঠি। আমাদের এলাকার কাড়ার বিলে প্রায় একশত পোলো নিয়ে আমরা মাছ ধরেছি। শোল, টাকি, রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরেছি।’

লোহাগড়া উপজেলার হান্দলা গ্রামের দাউদ হোসেন বলেন, ‘লোহাগড়া উপজেলার সর্ববৃহৎ বিল ইছামতি। এ বিলে পানি কমে যাওয়ায় মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দেশি প্রজাতির কই, মাগুর, বাইনসহ অনেক ধরনের মাছ ধরেছি।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘নড়াইলের নদীগুলো র পানি মিষ্টি। তাই এ এলাকায় দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। সরপুঁটি, পুঁটি, টেংরা, পাবদা, কই, মাগুর, শোল, টাকি, কাকলেসহ সব প্রজাতির মাছ এখনও নড়াইলের নদী, খাল ও বিলে পাওয়া যায়। তবে নদীতে পাট জাগ দেওয়া, বিষ প্রয়োজন, পানি কম হওয়াসহ নানা কারণে মাছের পরিমাণ কমে গিয়েছে। মাছের প্রজনন বৃদ্ধিসহ দেশি প্রজাতির মাছ রক্ষায় বিভিন্ন বিলে অভয়াশ্রম নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশি প্রজাতির মাছ রক্ষা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর