খেজুরের রস-গুড় ব্র্যান্ডিং করেছে মাদারীপুরকে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুরের প্রায় সব উপজেলায়ই গুড় কম-বেশি পাওয়া যায়। তবে খোয়াজপুর, মস্তফাপুর, কালিকাপুর, কুনিয়া, আমগ্রাম, বাজিতপুর, বদরপাশা, কবিরাজপুর, লক্ষ্মীপুর, রমজানপুর,  সাহেবরামপুর, উমেদপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গুড় পাওয়া যায়। মাদারীপুর শহরের পুরান কোর্ট এলাকায় গুড়ের বাজার বেশ জমে উঠে প্রতিবছরই। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে অনেকে গুড় কিনতে আসে।

প্রতিদিন বিকেলে গাছ কাটায় ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। খুব ভোরে গাছি ও তার পরিবারের সদস্যরা গাছ থেকে রস নামিয়ে সেই রস জ্বালিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু গুড়। আগুনের আঁচে ধীরে ধীরে তৈরি হয় ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, খানডা গুড়, নলেন গুড়। হাট-বাজার দেখা যায় গুড়ের দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। মৌসুমের শুরুতে ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে কেজিতে বিক্রি হয় এই গুড়। তবে বেশি দামের যে গুড় বিক্রি হয় তার মান ও স্বাদ বেশি ভালো।

মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে খেজুর গাছের সম্ভাব্য আবাদকৃত জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হেক্টর, খেজুর গাছের সংখ্যা ছিল ৬৪ হাজার ৮০০। রস বা সংগ্রহ করা হয় এমন গাছের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৭২৫টি। রস সংগ্রহ করে এমন গাছি ছিলেন ৫১৫ জন।

 মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর এলাকার গাছি লাল চান বেপারী বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর ধরে গাছ কাটি ও গুড় বানাই। খাটি গুড় বিক্রি করি বেশি দামে। আমার গুড় শুধু এই এলাকায় নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। গাছ কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো রস পাই না। গাছের মালিকের সঙ্গে পালা করে রস নিতে হয়।  একদিন গাছের মালিক নেন, আরেকদিন আমি। আগে আমরা দিনে ২০-৩০টা খেজুরের গাছ কাটতাম, এখন ৬-৮টা গাছ কাটি।’

পুরান কোর্ট এলাকার গুড় বিক্রেতা আ. মান্নান বলেন, ‘এখানে গুড় কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসে। সবাই খাঁটি গুড় চায়। অনেকে টাকার দিকে তাকায় না। তারা খাঁটি গুড় চায়। অনেকে মোটামুটি দামের গুড় নেয়।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘খেজুর গুড়ের মান ভালো করার জন্য আমরা গুড় প্রস্তুতকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আর খেজুর গাছের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য হর্টিকালচার সেন্টারে ১০ হাজার চারা গাছের অর্ডার দিয়েছি। আমরা মাদারীপুরের খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য রক্ষায় চেষ্টা করছি।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর