হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জ স্টেডিয়াম এলাকা এখন আবর্জনার ভাগাড়, দু’দফা জমি কিনেও নানা জটিলতায় থমকে আছে হবিগঞ্জ পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ। জমি কিনে দফায় দফায় চেষ্টা করে কয়েক বছরেও এটি নির্মাণ করা যায়নি।
শুরুতে স্থানীয় বাসিন্দা আর জনপ্রতিনিধিদের আপত্তির কারণে তা থমকে দাঁড়ায়। কিন্তু এখন হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কটি দুই লেন করার পরিকল্পনায় এটি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পূর্বের কেনা জমিটিও এখন কাজে আসছে না। তাই আবারও জমি কেনা হয়েছে। এদিকে ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় পৌর এলাকার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আধুনিক স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। ফলে দুর্গন্ধে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বাইপাস সড়কটি। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আদালতসহ আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। এতে ক্ষোভের অন্ত নেই স্থানীয়দের মাঝে। অপরদিকে এ স্থানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে তাগিদ দিয়েছে জেলা প্রশাসন কিন্তু তাতেও কোনো ফল মিলছে না।
এ বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন কলি জানান, পৌরসভার ফেলা বর্জ্যে আধুনিক স্টেডিয়াম এলাকায় দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে। ফলে জাতীয় পর্যায়ের অনেক প্রতিযোগিতা স্টেডিয়ামে আয়োজন করা সম্ভব হয় না। এ সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন সময় পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে বারবার পৌর কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের লিখিত চিঠিও দেয়া হয়েছে।
পৌর মেয়র মো. মিজানুর রহমান মিজান জানান, পৌরসভার ময়লা ফেলার ডাম্পিং স্পট স্থাপনের জন্য কয়েক বছর পূর্বে বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া মৌজায় হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের পাশে ২ একর ২০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় জনসাধারণের আপত্তির কারণে উক্ত ভূমির দখল পায়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে কামড়াপুর-নসরতপুর বাইপাস সড়ক। এ সড়কের পাশেই শহরতলীর সুলতান মাহমুদপুর গ্রাম সংলগ্ন আধুনিক স্টেডিয়াম। এর ঠিক উল্টো পাশে রয়েছে জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, দি রোজেস কেজি স্কুল, আনসার ভিডিপি কার্যালয়, শাহ এএমএস কিবরিয়া অডিটরিয়াম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। আধুনিক স্টেডিয়াম এবং এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যবর্তী বাইপাস সড়কের দু’পাশে দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরের ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।
এ অবস্থায় বাইপাস সড়কের পাশে ওই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে গত ২০ আগস্ট পৌর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় জেলা প্রশাসন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ সড়কটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে যুক্ত রয়েছে। উক্ত সড়কটি জেলার লাখাই, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ উপজেলার সাথে সদর উপজেলার যোগাযোগে ব্যবহৃত হয়। বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিদিন রাস্তাটি ব্যবহার করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের কামড়াপুর থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত অংশে রাস্তার দু’পাশে শহরের আবর্জনা ডাম্পিং করা হয়। দুর্গন্ধ ও নোংরায় এ জায়গার পরিবেশ ন্যূনতম নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যটুকুও হারিয়েছে। এমতাবস্থায় বাইপাস সড়কের পাশে স্তূপিকৃত আবর্জনা পরিষ্কারকরণ, নির্দিষ্ট স্থানে শহরের আবর্জনা ফেলার পদক্ষেপ গ্রহণসহ নতুন করে যেন ময়লা-আবর্জনা না ফেলা হয় সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়।