নেত্রকোনায় অবাধে চলছে পাখি নিধন

বিজয় দাস নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে চলছে দেশীয় প্রজাতিসহ অতিথি পাখি নিধনযজ্ঞ। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্টের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। অথচ এ নিধনযজ্ঞ বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ নজরে পড়ে না।

প্রতি বছর শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা ও খাবারের সন্ধানে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি জেলার বিভিন্ন হাওর ও মুক্ত জলাশয়ে আসতে শুরু করে। বালিহাঁস, ল্যান্জা হাঁস, সরালী, পানি খাওরী, হরিকল, কুদালী, চখা, পানকৌড়ি, ডাহুক, কোড়া, ঘুঘু, কানা বক, সাদা বক ও কাইমসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠে জেলার খালিয়াজুরী, মদন, মোহনগঞ্জ, কলমাকান্দার বিস্তীর্ণ হাওর জনপদ। এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারি ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি নিধনে মেতে উঠে। শিকারিরা পাখি শিকারের পর এসব পাখি স্থানীয় হাটবাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছে।

পাখি শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কোন কার্যকর উদ্যোগ নেই বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। পরিবেশবাদীরা অবাধে শীতের অতিথি পাখি শিকার ও নিধনযজ্ঞ  বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।

পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারে পাখি বিক্রি করতে আসা পাখিশিকারি আব্দুল  পাখি শিকারের কথা স্বীকার করে বলেন, শীত মৌসুমে কাজের ফাঁকে তিনি পাখি শিকার করে তা স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করে থাকেন। পাখি শিকার করা নিষেধ কিনা তা তার জানা নেই।

পরিবেশবাদী জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখ-পাখালির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এসব পাখি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনসহ সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা পাখি নিধনের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দিতে হবে। তাহলেই অতিথি পাখি নিধন রোধ করা সম্ভব হবে।

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলি মুন্সী বলেছেন, শিকার ও নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর