হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেটের ওসমানীনগরের পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে জেলে ও নিম্নআয়ের শতাধিক পরিবারের বসবাস। গ্রামের একদিকে বুড়ি নদী এবং অন্যদিকে সাদিখাল। বুড়ি নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে বর্ষায় নৌকা এবং গ্রীষ্মে সাঁকোই একমাত্র ভরসা তাদের। সম্প্রতি গ্রামবাসীর জন্য একটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে কিছু প্রভাবশালী লোক শুরু করেছে বিরোধিতা। তবে গ্রামবাসীর বিশ্বাস এবার তাদের স্বপ্নপূরণ হবে। জানা যায়, দৌলতপুর গ্রামবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বুড়ি নদীর উপর একটি সেতুর নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘দৌলতপুর অনিল দাশের বাড়ি ও গজিয়া হাজী তাজ উল্ল্যার বাড়ি সংলগ্ন বুড়ি নদীর উপর সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্টরা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছে।
এমন খবরে আনন্দিত হয়েছে গ্রামবাসী। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু লোক সেতুর স্থান পরিবর্তনের স্বার্থে বিরোধিতা শুরু করায় সংশয় তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীর মনে। কারণ ২০১৭ সালে বুড়ি নদীর উপর ৬০ ফুট দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালীদের বিরোধিতার কারণে অর্থ সংকট দেখিয়ে প্রকল্পটি বাতিল করে দেয়া হয়। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, দরিদ্র গ্রামবাসীর স্বার্থে সেতু নির্মাণের জন্য বড় সড়কের প্রয়োজনে নিজের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে জায়গা দিয়েছেন গজিয়া গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হাজী তাজ উল্যা। গ্রামবাসীও নিজ উদ্যোগে সড়কে কাজ করছেন। তাদের বিশ্বাস এবার সেতু নির্মাণ হবে এবং তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। গ্রামবাসী জানান, বর্ষায় প্রায় ৬ মাস বিদ্যালয়ে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা। গ্রীষ্মে সাঁকো পাড়ি দিয়ে ছোট শিশুরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় জলে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ দশায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বেশি এখানে। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঝিনুক দাশ জানায়, বর্ষায় সাঁকো না থাকায় নৌকা অথবা সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু সব সময় তা সম্ভব হয় না। সেতুটি নির্মাণ হলে আমরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যেতে পারবো। স্থানীয় মতি লাল দত্ত বলেন, ২০১৭ সালে সেতু নির্মাণ প্রকল্প দরপত্র আহ্বান করার পরও প্রভাশালী কিছু লোকের কারণে বাস্তবায়ন হয়নি। এবারো সেতু নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আশা করি গ্রামবাসীর কথা বিবেচনায় নিয়ে তা বাস্তবায়িত হবে। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মিলন কান্তি রায় বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঢাকার একটি বিশেষজ্ঞ দল স্থান পরিদর্শন করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।