ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমন গোল মেসি বলেই সম্ভব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ২৮১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডি-বক্সের একটু বাইরে ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়দের জটলা। সেই জটলার মধ্যে থেকেই বলটা ‘ফ্লিক’ করে পেছনে থাকা মেসির কাছে দিলেন সতীর্থ আর্তুরো ভিদাল। সাধারণত এ সময়ে কী হয়? জটলার মধ্যে থেকে ড্রিবলের পর ড্রিবল করে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন মেসি, এমনটা দেখে দেখেই তো অভ্যস্ত সবাই। ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক নেতোও হয়তো সেটাই ভেবেছিলেন।

কিন্তু প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা যদি এভাবে মেসির প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে আগে থেকে বুঝতে পারতেন, তাহলে তিনি মেসি কেন! সবাই যেখানে অপেক্ষা করছেন মেসির পায়ে ড্রিবল দেখার, এজেকিয়েল গ্যারায়, দানি পারেহোর মতো ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়েরা ভাবছেন তাঁদের কাটিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করবেন মেসি, সেই মুহূর্তেই কয়েক মিলি সেকেন্ডের ব্যবধানে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন আর্জেন্টাইন মহা তারকা, বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটেই গোল করবেন। গোলরক্ষকসহ তখন ডি-বক্সের ভেতরে পাঁচজন ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়, আর বাইরে চারজন। মেসির পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন পারেহোসহ আরও একজন খেলোয়াড়।

শতকরা ৯৮ জন খেলোয়াড় হয়তো এই অবস্থান থেকে গোলে শট নেওয়ার কথা ভাবতেন না। মেসিদের মতো চক্ষুষ্মানরাই কেবল ভাবতে পারবেন।

এই জটলার ভেতর থেকেও যে বক্সের বাইরে থেকে দুরূহ কোণে জোরালো শট মেরে গোলরক্ষককে হতভম্ব করে গোল করা যেতে পারে, এ শুধু মেসি এবং তাঁর মাপের প্রতিভার পক্ষেই ভাবা সম্ভব। ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন, বলটা ঠিক ঠিক জালের এক কোনায় গিয়ে আশ্রয় নিল। নড়তেও পারলেন না একটু। ওই যে, ভেবে রেখেছিলেন, এই বুঝি ড্রিবল করতে করতে বক্সে ঢুকবেন মেসি!

নানাভাবে আটকে রাখার পরেও মেসির কাছ থেকে গোল খেয়ে যে তাঁরা ভীষণ বিরক্ত হয়েছেন, তা বোঝা গেল মেসির আর্জেন্টাইন সতীর্থ ভ্যালেন্সিয়ার সেন্টারব্যাক এজেকিয়েল গ্যারায়ের প্রতিক্রিয়া দেখেই। দুহাত ছুড়ে নিজের রাগ ঝেড়েছেন গোল হওয়ার ঠিক পরপর।

আর এই গোলেই গতকাল বিপদ কাটিয়েছে বার্সা, না হয় যে হারতে হতো! ২-২ গোলে ড্র করে পরে মাঠ ছেড়েছে তারা। জোড়া গোল করে এই মৌসুমে নিজের গোলসংখ্যাকে একুশে নিয়ে গেলেন তিনি। আর অসাধারণ এক গোলের রাতে মেসির নামের পাশে লেখা হয়েছে আরও কিছু রেকর্ড, কিছু চোখে লাগা পরিসংখ্যান।

মেসি খেলেছেন কিন্তু গোলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেননি, লা লিগায় এমন হয়েছিল সেই সেপ্টেম্বরে। তারপর থেকে টানা ১৬ ম্যাচে গোল, না হয় গোল-সহায়তা করেই চলেছেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ৯ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল করেছেন মেসি। ২০১৩ সালের পর এবারই আবার এভাবে ধারাবাহিক গোল পাচ্ছেন। ২০১৩ সালে টানা ১০ ম্যাচে গোল করেছেন ভালভার্দের প্রিয় শিষ্য। গতকাল ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করে এই মৌসুমে ২০+ গোল হয়ে গেল তাঁর। টানা ১১ মৌসুম ধরে বিশ বা বিশের অধিক গোল করছেন মেসি! ভাবা যায়?

মেসি বলেই হয়তো এখন এসব কিছু আর আশ্চর্য লাগে না!

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

এমন গোল মেসি বলেই সম্ভব

আপডেট টাইম : ১২:০০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডি-বক্সের একটু বাইরে ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়দের জটলা। সেই জটলার মধ্যে থেকেই বলটা ‘ফ্লিক’ করে পেছনে থাকা মেসির কাছে দিলেন সতীর্থ আর্তুরো ভিদাল। সাধারণত এ সময়ে কী হয়? জটলার মধ্যে থেকে ড্রিবলের পর ড্রিবল করে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন মেসি, এমনটা দেখে দেখেই তো অভ্যস্ত সবাই। ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক নেতোও হয়তো সেটাই ভেবেছিলেন।

কিন্তু প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা যদি এভাবে মেসির প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে আগে থেকে বুঝতে পারতেন, তাহলে তিনি মেসি কেন! সবাই যেখানে অপেক্ষা করছেন মেসির পায়ে ড্রিবল দেখার, এজেকিয়েল গ্যারায়, দানি পারেহোর মতো ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়েরা ভাবছেন তাঁদের কাটিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করবেন মেসি, সেই মুহূর্তেই কয়েক মিলি সেকেন্ডের ব্যবধানে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন আর্জেন্টাইন মহা তারকা, বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটেই গোল করবেন। গোলরক্ষকসহ তখন ডি-বক্সের ভেতরে পাঁচজন ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়, আর বাইরে চারজন। মেসির পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন পারেহোসহ আরও একজন খেলোয়াড়।

শতকরা ৯৮ জন খেলোয়াড় হয়তো এই অবস্থান থেকে গোলে শট নেওয়ার কথা ভাবতেন না। মেসিদের মতো চক্ষুষ্মানরাই কেবল ভাবতে পারবেন।

এই জটলার ভেতর থেকেও যে বক্সের বাইরে থেকে দুরূহ কোণে জোরালো শট মেরে গোলরক্ষককে হতভম্ব করে গোল করা যেতে পারে, এ শুধু মেসি এবং তাঁর মাপের প্রতিভার পক্ষেই ভাবা সম্ভব। ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলেন, বলটা ঠিক ঠিক জালের এক কোনায় গিয়ে আশ্রয় নিল। নড়তেও পারলেন না একটু। ওই যে, ভেবে রেখেছিলেন, এই বুঝি ড্রিবল করতে করতে বক্সে ঢুকবেন মেসি!

নানাভাবে আটকে রাখার পরেও মেসির কাছ থেকে গোল খেয়ে যে তাঁরা ভীষণ বিরক্ত হয়েছেন, তা বোঝা গেল মেসির আর্জেন্টাইন সতীর্থ ভ্যালেন্সিয়ার সেন্টারব্যাক এজেকিয়েল গ্যারায়ের প্রতিক্রিয়া দেখেই। দুহাত ছুড়ে নিজের রাগ ঝেড়েছেন গোল হওয়ার ঠিক পরপর।

আর এই গোলেই গতকাল বিপদ কাটিয়েছে বার্সা, না হয় যে হারতে হতো! ২-২ গোলে ড্র করে পরে মাঠ ছেড়েছে তারা। জোড়া গোল করে এই মৌসুমে নিজের গোলসংখ্যাকে একুশে নিয়ে গেলেন তিনি। আর অসাধারণ এক গোলের রাতে মেসির নামের পাশে লেখা হয়েছে আরও কিছু রেকর্ড, কিছু চোখে লাগা পরিসংখ্যান।

মেসি খেলেছেন কিন্তু গোলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেননি, লা লিগায় এমন হয়েছিল সেই সেপ্টেম্বরে। তারপর থেকে টানা ১৬ ম্যাচে গোল, না হয় গোল-সহায়তা করেই চলেছেন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ৯ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল করেছেন মেসি। ২০১৩ সালের পর এবারই আবার এভাবে ধারাবাহিক গোল পাচ্ছেন। ২০১৩ সালে টানা ১০ ম্যাচে গোল করেছেন ভালভার্দের প্রিয় শিষ্য। গতকাল ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করে এই মৌসুমে ২০+ গোল হয়ে গেল তাঁর। টানা ১১ মৌসুম ধরে বিশ বা বিশের অধিক গোল করছেন মেসি! ভাবা যায়?

মেসি বলেই হয়তো এখন এসব কিছু আর আশ্চর্য লাগে না!