হাওর বার্তা ডেস্কঃ দ্য আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, প্রতিবছর আরও ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ক্যানসার আক্রান্ত মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়। মরণব্যাধি ক্যানসারের খাতায় রোগী হিসেবে নাম লেখান তারা। এই রোগীদের বেশিরভাগ অংশই মৃত্যুবরণ করে দ্রুত। আর যদি কেউ বেঁচে থাকেন, সেটাকে বলা হয় মিরাকল। ক্যানসার প্রতিরোধ করাটা কঠিন। আর সেটার প্রতিষেধক? খুঁজে পাওয়া আরও বেশি কঠিন।
তবে হ্যাঁ, ক্যানসার হওয়ার পরেও কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে সারা শরীরে দ্রুত ক্যানাসার ছড়িয়ে পড়াকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। আর এই অভ্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। ক্যানাসার প্রতিরোধে কিছু খাবার আক্ষরিকভাবেই সাহায্য করে। চলুন না, দেখে নেওয়া যাক এই খাবারগুলোকে!
কমলা ফল ও সবজি-
আপনি কি জানেন, কমলা কেন কমলা রঙয়ের হয়? অন্যান্য খাবারের মতোই কমলার কমলা রঙ হওয়ারও কারণ আছে। ক্যারোটেনয়েডের কারণেই গাজর এবং অন্যান্য অনেক ফল এবং শাক-সবজিতে কমলা রঙ দেখা যায়। মিষ্টি আলু, কুমড়া, পেঁপে, এপ্রিকটসহ এমন আরও অনেক কমলা রঙয়ের ফল ও সবজি পাবেন আপনি। এই ক্যারোটেনয়েড এক প্রকারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেটি কিনা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই ক্যানসার থেকে বাঁচতে বেশি করে ক্যারোটেনয়েডসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
শস্য উপাদান-
অনেকেই এখন কার্বোহাইড্রেট কম গ্রহণ করেন। এতে করে শারীরিক কাঠমো ঠিকঠাক থাকে বটে, তবে একইসাথে আমাদের শরীরে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ঠিক কী কারণে শর্করা ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করে তা নিয়ে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও অনেকে ভেবে থাকেন এতে থাকা আঁশ এ ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আঁশ শরীরে এস্ট্রোজেনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সাহায্য করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শিমের বীজ-
শিমের বীজ প্রোটিন ও শর্করায় পূর্ণ থাকে। ফলে মাংস খাওয়ার প্রয়োজন যেমন হয় না, ঠিক তেমনি আঁশও পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। অতিরিক্ত মাংস গ্রহণ করলে শরীরে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অন্যদিকে, শিমের বীজে প্রোটিন থাকলেও সেটা উদ্ভিজ্জ খাবার। তাই এ ক্ষেত্রে শিমের বীজ হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত খাবার!
জলপাই তেল-
অতিরিক্ত পরিমাণ ফ্যাট গ্রহণ করলে ক্যানসার, বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই, অন্যান্য ফ্যাট বাদ দিয়ে যদি আপনি উদ্ভিজ্জ ও স্বাস্থ্যসম্মত ফ্যাট গ্রহণ করেন, তাহলে শারীরিক কোনো সমস্যা হওয়ার চিন্তা থাকে না। এক্ষেত্রে জলপাই তেল আপনার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হতে পারে। এর অর্থ এই না যে, এ ধরনেরর ফ্যাট গ্রহণ করলে আপনার আর ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাই থাকবে না। তবে এভাবে আপনি কিছুটা হলেও নিরাপদ রাখতে পারেন আপনার স্বাস্থ্যকে।
সয়া-
সয়া কীভাবে ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে সেটা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে। সয়ার মধ্যে আছে- সাইটোএস্ট্রোজেন নামক একটি উপাদান, যেটি কিনা শরীরে ক্ষতিকর উপাদান তৈরি করে এমন সব হরমোনকে বাধাপ্রদান করে। অনেকে অবশ্য সয়াকে এর অতিরিক্ত প্রোটিনের জন্য বেশ অস্বাস্থ্যকর বলে থাকেন। তব হ্যাঁ, প্রোটিন খানিকটা বেশি হলেও সয়া অন্যান্য দিক দিয়ে ক্যানসারের প্রতিরোধক হিসেবে বেশ কার্যকর।
তবে হ্যাঁ, চিকিৎসকেরা এখনও পর্যন্ত খাবারের পুষ্টি উপাদান ঠিক কতটা এবং কীভাবে ক্যানসার মোকাবেলা করে তা নিয়ে নিশ্চিত নন। কোন খাবারটি ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করে সেটা নিয়ে ভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে হ্যাঁ, নির্দিষ্ট উপাদানের ব্যাপারে নিশ্চিত না হলেও উপরে বর্ণিত খাবারগুলো যে আপনার শরীরে ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করতে পারবে এটা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত তারা!