সিলেটে ত্রাণ সহায়তাকারী সেই গায়ককে পুলিশের ‘ধমক’

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেট-সুনামগঞ্জ বন্যা পরিস্থিতিতে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তরুণ গায়ক তাশরীফ খান। ফেসবুক লাইভে এসে দুদিনেই বন্যার্তদের ১৬ লাখ টাকার ব্যবস্থা করেন তিনি।

এর পর গত কয়েক দিনে তার এই সহায়তার পরিমাণ দেড় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।

এমন দুর্দান্ত কাজ করেও বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন এ গায়ক। সিলেটে ত্রাণ দিতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তিনি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাইভে এসে এ অভিযোগ করেন তাশরীফ খান। তিনি জানালেন, ত্রাণ বণ্টন করে ক্লান্ত শরীরে দল নিয়ে যখন চা খেতে খেতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখনই পুলিশ এসে তাদের ধমক দেয় এবং ওই স্থান ছেড়ে চলে যেতে বলে।

ঘটনা প্রসঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে তাশরীফ বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) আড়াইটার দিকের ঘটনাটা। আমি জায়গাটার নাম বলব না। সিলেটের মধ্যেই। আমার গলাব্যথা ছিল। সবাই লাল চা খাচ্ছিলাম। গলা বসে গিয়েছিল। সেখানে পুলিশের একটি গাড়ি এলো। একজন অফিসার এসে ধমকের সুরে আমাদের বললেন, ‘আপনারা এখানে কী করছেন?’ আমি বললাম, ‘স্যার আমরা ঢাকা থেকে এখানে ত্রাণ দিতে এসেছি। আপনাদের সিলেটের জন্যই কাজ করছি। আমি একটি চা খেতে এসেছি। খেয়েই চলে যাব। ’

এ কথা শুনেও ওই পুলিশ সদস্য সরাসরি ধমক তাশরীফকে। বলেন, ‘চলে যান এখান থেকে।’

তাশরীফ জানান, তখন তার খুব খারাপ লাগে বিষয়টি। তখন তিনি ওই পুলিশ সদস্যকে পাল্টা জিজ্ঞেস করেন, ‘স্যার, একজন নাগরিককে এভাবে ধমক দেবেন না। আমরা সিলেটের জন্য কাজ করছি। আমরা এখানে চুরি করতে আসি নাই। এটা করবেন না। আমি চায়ের কাপটা শেষ করে চলে যাব, ২টা মিনিট সময় দেন। ’

তাশরীফ বলেন, তখন সেই পুলিশ সদস্য আমাকে আঙুল তুলে বলেন, ‘এহন ভালো কইরা বলতেছি, এরপরে খারাপ করে বলব। এক্ষুণি চলে যান।’

এর পর তাশরীফ সেই পুলিশ সদস্যের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি তখন চায়ের কাপ রেখে চলে যাই। কোনো কথাও বলি নাই। কাউকে ব্যবহার শেখাতেও আসিনি। আমি এখানে ফাইট করতেও আসিনি। আমি কারও কাছে বিচারও দিচ্ছি না। আমি শেয়ার করছি, স্যার, আপনি যদি এই লাইভ দেখে থাকেন, আমার হাম্বল রিকোয়েস্ট। আমার টিমের পক্ষ থেকে বলছি, দয়া করে এই সময়টায়, পারলে আমাদের একটু পাশে দাঁড়ান। পারলে আমাদের একটু সাহস দিয়েন। আমাদের আপনাদের সাহসটা খুব দরকার। আপনারা সাহস দিলে আমাদের কাঁধটা আরও ভারি হয়ে যায়। আর আমাদের সহায়তা দেওয়ার মতো সেই যোগ্যতাটা হয়েছে।’

চিরকুট ব্যান্ডের এ গায়ক বলেন, ‘প্রশাসনের সমর্থন পেলে, নিরাপত্তা দেওয়া হলে, ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থা করা হলে সিলেট-সুনামগঞ্জে যত আশ্রয়কেন্দ্র আছে সবই ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারব। আমরা দায়িত্ব নিয়ে পুরো দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব। এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমাদের দায়িত্ব দিয়ে দেখতে পারেন।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর