১১৬ আলেমদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামার খবর, যা বলল দুদক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১১৬ জন আলেম ও ধর্মীয় বক্তার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তবে ‘গণকমিশন’ দেশের ১১৬ আলেম ও ১০০০ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ২ হাজার ২১৫ পাতার যে শ্বেতপত্র কমিশনে জমা দিয়েছে, সেটি পরীক্ষার জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি করা হয়েছে বলে জানায় দুদক। সংস্থাটি জানিয়েছে, কমিটির উপস্থাপিত সারসংক্ষেপ পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

১১৬ জন ধর্মীয় বক্তার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে গণকমিশনের করা অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুদক- গতকাল একটি গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়।

এ খবরের পর বৃহস্পতিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযােগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘১১৬ জন ধর্মীয় বক্তা/আলেমের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন হতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে মর্মে কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ বিভ্রান্তি দূর করতে সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য প্রকৃত বিষয়টি নিয়ে তুলে ধরা হলাে।’

‘প্রকৃত ঘটনা এই যে, সম্প্রতি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ২২১৫ পাতার একটি শ্বেতপত্র দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করে। শ্বেতপত্রটি পরীক্ষা করে সংক্ষিপ্তসার কমিশনে উপস্থাপন করার জন্য দুদক হতে একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। শ্বেতপত্রটি পরীক্ষা করে কমিশনের নিকট উপস্থাপন করাই এই কমিটির দায়িত্ব। আলেমদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অনুসন্ধানের কোনো দায়িত্ব কমিটিকে দেওয়া হয়নি। এমনকি কমিশন হতে কোন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উল্লেখ্য যে, দুর্নীতি দমন কমিশনে সরাসরি পত্রযােগে, ১০৬ হটলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত বিভিন্ন অভিযােগ পাওয়া যায়। অভিযােগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তা পুংখানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়। অভিযােগ পরীক্ষান্তে প্রাথমিকভাবে কোনো দুর্নীতির উপাদান বা তথ্য পাওয়া গেলে এবং তা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের সিডিউলভুক্ত হলেই কেবল- তা পরবর্তীতে অনুসন্ধানের অনুমােদনের জন্য কমিশনে উপস্থাপন করা হয়। এটিই দুদকে অভিযােগ প্রাপ্তি ও নিষ্পত্তির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।’

‘ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শ্বেতপত্রটি ২২১৫ পাতার হওয়ায় তা পরীক্ষার জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একটি সংক্ষিপ্তসার কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে মাত্র। কমিটিকে কোনো অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বা দুদক থেকে কোনো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। ধর্মীয় বক্তা বা আলেমগণের আর্থিক লেনদেন অনুসন্ধান সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম এ কমিটি শুরু করবে না। এ ধরনের কোনো দায়িত্ব কমিটিকে দেওয়া হয়নি। কমিটি কেবল শ্বেতপত্রটি পরীক্ষান্তে তাদের পর্যবেক্ষণ কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে। পরবর্তীতে কমিশন বিষয়বস্তু বিশদ পরীক্ষান্তে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আশা করি, এ বিষয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার অবকাশ থাকবে না।’

এদিকে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে আজ দুপুরে জরুরি প্রেস ব্রিফিং করেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, কমিশনে আসা অভিযোগ পরীক্ষান্তে দুনীতির কোনো উপাদান বা তথ্য পাওয়া গেলে এবং তা কমিশন আইনের তফসিলভুক্ত হলেই পরবর্তী অনুসন্ধানের অনুমোদনের জন্য কমিশনে উপস্থাপন করা হয়। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শ্বেতপত্রটি ২ হাজার ২১৫ পাতার হওয়ায় তা পরীক্ষার জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি করা হয়েছে।কমিটিকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বা কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। ধর্মীয় বক্তা বা আলেমদের আর্থিক লেনদেন অনুসন্ধান-সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম এ কমিটি শুরু করবে না।

দুদক সচিব বলেন, ১১৬ জন আলেমের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে মর্মে কতিপয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ বিভ্রান্তি দূর করতে সবার অবগতির জন্য প্রকৃত বিষয়টি তুলে ধরা হলো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর