বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারত উজান থেকে ইচ্ছামতো পানি ছেড়ে দেয়া এবং কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে আষাঢ়ের শুরুতেই বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জের মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে গেছে। এক মাস আগের বন্যার ধকল কাটতে না কাটতে নতুন করে শুরু হয়েছে বন্যা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত লাখো মানষ। বানের পানিতে চরম দুর্ভোগের মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। সিলেট পাউবো ও সিলেট আবহাওয়া অফিস তথ্য মতে, মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির সাথে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নেমে পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। অন্যদিকে ভারতের গজলডোবা বাঁধ খুলে দেয়ায় তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো গেইট খুলে দেয়ায় তিস্তার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার বাড়িঘর। পানি ঢুকেছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায়। রংপুরের তিন উপজেলা এখন পানিতে ভাসছে। রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথায় তিস্তার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিস্তার আশপাশের ছোট নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এসব অঞ্চল ও নদী লাগোয়া কিছু গ্রামে পানি ঢুকে পরেছে।

ফয়সাল আমীন, সিলেট থেকে জানান, ফের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির রূপ নিচ্ছে সিলেট জুড়ে। অব্যাহত বৃষ্টি আর উজানের ঢলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হচ্ছে এখানকার নগর সহ নতুন নতুন এলাকা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন বন্যাকবলিত মানুষেরা। সিলেট পাউবো ও সিলেট আবহাওয়া অফিস তথ্য মতে, গত কয়েকদিন ধরে সিলেটে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এর সাথে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নেমে আসছে ঢল। দুইয়ে মিলে সিলেট অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। এছাড়া আবহাওয়ার সুখবরও নেই সিলেটের জন্য। সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ স্থানে আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাসজুড়ে সিলেটে কমবেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান আবহাওয়া অধিদফতর।

সিলেটে গত বুধবার থেকে খারাপের দিকে যায় বন্যা পরিস্থিতি। জেলার কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলায় পানি ক্রমেই বাড়ছে। অব্যাহত পানিবৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অসংখ্য বাড়িঘর, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট এখন পানিতে কাবু। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর সাথে উপজেলা সদর কিংবা জেলা সদরের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। সুপেয় পানির সংকটও দেখা দিচ্ছে। নদীতে পানি বাড়তে থাকায় তীর উপচে নগরীতে ঢুকে পড়েছে পানি। ইতোমধ্যে উপশহর, তালতলা, জামতলা, কালিঘাট, সোবহানীঘাট, তেরোরতন প্রভৃতি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সিলেট পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী  জানান, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি ক্রমশই বাড়ছে। স্থানীয় প্রশাসন আমাদেরকে জানায়, সিলেট নগরের ৮ থেকে ১০টি এলাকা ছাড়াও জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার অন্তত ৫০ গ্রাম এরই মধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বেড়েছে।

মো. হাসান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ থেকে জানান, সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে ছাতক, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরের যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। গতকাল সকালে সুরমা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ পৌর শহর বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে শহরের নবীনগর, পশ্চিম তেঘরিয়া, উত্তর আরপিন নগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, বনানীপাড়া, সুলতানপুর, মরাটিলা ও নতুনপাড়া আবাসিক এলাকার ঘর বাড়িতে পানি ঢুকছে। ফলে মানুষের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যা কবলিত মানুষরা। পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা জুবেল মিয়া, ঘরের মধ্যে হাটু পানি, মালপত্র সব নিয়ে বিচানার উপর বসে আছি, কোন ধরণের ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছি না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গত ১৩ মে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয়। প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় মানুষজন বিপাকে পড়েছে। জেলা সদরের পাশাপাশি বিশ্বম্ভরপুর, শান্তিগঞ্জ, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজারসহ মোট ৬টি উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী। জেলা সদরের সাথে সবকটি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

কাজি রেজাউল করিম রেজা, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে জানান, সুনামগঞ্জের ছাতকে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অতীতের সকল বন্যা রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। লাখ-লাখ মানুষ কর্মহীন ও পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সকল হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট। একমাসের ব্যবধানে আবারও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষ। বন্যায় উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক ঘর বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দির। উপজেলা পরিষদের সকল কার্যালয় বাসা-বাড়ি, থানা, হাসপাতালে বন্যার পানিতে টইটুম্বর। ছাতকের সব এলাকায় এখন থৈ থৈ করছে পানি। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। সুরমা নদীতে খেয়া পারাপারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত বুধবার থেকে এখানে বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুরমা, পিয়াইন, চেলা নদীসহ সকল নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ও নদ- নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। হাজার-হাজার মানুষ বিভিন্ন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয়হীন মানুষ পানিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নিজের গবাদিপশু নিয়ে। অধিকাংশ এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে ছাতক-সিলেট রেল লাইনও। এখানে বন্যা আর মানুষের কান্না একাকার হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  জানান, নিজের বাসভবনসহ পরিষদের সব কয়টি বাসা- বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। মানুষ বের হতে পারছেনা ঘর থেকে। বিপদগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে। এ দিকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ও অব্যাহত রাখা হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলার উঁচু এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আব্দুস সালাম, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে জানান, বিশ্বনাথে আবারও দেখা দিয়েছে বন্যা। বন্যাায় তলিয়ে গেছে লামাকাজি-সুনামগঞ্জ সড়ক ও বিশ্বনাথ বৈরাগী বাজার-সিংগেরকাছ সড়ক। খাজাঞ্চি ও লামাকাজী ইউনিয়নের ৭৫ভাগ ঘর বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। এছাড়াও বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে রামপাশা, দশঘর, দৌলতপু ও দেওকলস ইউনিয়নে। গত তিন সপ্তার আগে বিশ্বনাথে প্রায় সবকটি ইউনিয়ন ছিল বন্যা কবলিত। সেই বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দেখা দিয়েছে ফের বন্যা। টানা দুইবারে বন্যায় পানিবন্দি ছয় ইউনিয়নের প্রায় হাজারও পরিবার এখন দিশেহারা।

এদিকে উচু স্থান পর্যাপ্ত না থাকায় বন্যায় কবলিত মানুষ তাদের গৃহপালিত পশু, হাঁস, মুরগ ও মাছের খামার নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। মানুষের খাবারে পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পশু খাদ্যেও সংকট। সরেজমিন ঘুরে এমনটাই জানাগেছে উপজেলার পানিবন্দি মানুষের কাছ থেকে। তারা বলছেন গত বন্যায় চেয়ে এ বন্যার রূপ ভয়ঙ্কর। তাদের দাবি সরকারি সাহায্য সহযোগীতা যেন অব্যাতহ থাকে, আর যারা পানিবন্দি তারা যেন ত্রান পায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান ইনকিলাবকে জানান, প্রায় ছয়টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত। এই ইউনিয়ন তিন টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। শুকনো খাবারের জন্য আমরা আলোচনা করেছি। আসলেই দ্রæত বিতরণ করা হবে। আমরা পানিবন্দি মানুষের পাশেই আছি।

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে রাস্তা-ঘাট থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগ কমেনি পানি বন্দি মানুষের। বন্যার পানি প্রবেশ করায় উপজেলার ৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রেখেছে শিক্ষা বিভাগ। টানা ৫দিন ধরে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় এসব এলাকার প্রায় ৫শ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, বাদামসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির ক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

অন্যদিকে ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে সদর উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ছে। এর ফলে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পোড়ারচর ও পূর্ব তিন হাজারী গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে নিম্নাঞ্চলের দুই গ্রামের অন্তত শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকার মানুষ নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে গত সাত দিন ধরে একটু একুট করে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যাত্রাপুর ইউনিয়নের সব থেকে নিম্নাঞ্চল পোড়ারচর ও পূর্ব তিন হাজারী নামের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে পোড়ার চরের ৪০ পরিবার ও পূর্ব তিন হাজারী গ্রামের ৬৫টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রাম (পাউবো’র) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ইনকিলবকে জানান, তিস্তা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার চরাঞ্চলগুলিতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।

মুশফিকুর রহমান সৈকত, নীলফামারী থেকে জানান : দুই দিনের বৃষ্টি আর উজানের ঢলে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। তা অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে পানি লোকালয়ে ঢুকতে পারে। পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নীলফামারীর ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ছয়টি চর প্লাবিত হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। তিস্তা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তথ্যমতে, গতকাল তিস্তার পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে তা বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ডালিয়ার (পাউবো’র) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। উজানের ঢলের কারণে পানি বাড়লেও পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে সিরাজগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার। এর ফলে জেলার নদ-নদীরও পানি বাড়ছে। এতে ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার চর ও নিম্নাঞ্চল। পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আর পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে নানা জাতের উঠতি ফসল। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আটদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়ে ভাঙন। এসব এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সিরাজগঞ্জ (পাউবো’র) নির্বাহী প্রকৌশলী  জানান, যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যমুনায় যেভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর