মাঙ্কিপক্স উপসর্গে তিন সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনের পরামর্শ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের উপসর্গের ৯৫ ভাগই মুখে থাকে। ফলে কথাবার্তা বলার মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে তরুণরা। মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের অন্তত তিন সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শনিবার ঢাকায় এক সেমিনারে তারা এ পরামর্শ দেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ডা. মিলন হলে আয়োজিত সেমিনারে মাঙ্কিপক্সের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, ঢামেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালকদার, বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক ও নার্স।

সেমিনারে ঢামেক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক তানজিদা রুবায়েত ‘মাঙ্কিপক্স প্যানিক অর রিয়েল থ্রেট’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধ তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী স্মলপক্সের টিকা জোরদার না হওয়ায় তরুণদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মূলত সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া বেশি কাজ করায় তরুণদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। একসঙ্গে খেলাধুলা ও পরস্পরের মধ্যে কথা বলায় ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এতে আরও বলা হয়, স্মলপক্স টিকার বাইরে থাকাদের মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি ১০ থেকে ৪০ শতাংশ।

অধ্যক্ষ ডা. টিটো মিঞা বলেন, বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশনা দিয়েছে। শনাক্তকরণে আইইডিসিআর প্রস্তুতি নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি গাইডলাইনও রয়েছে। এটি তরুণ ও শিশুদের মধ্যে বেশি ছড়ানোয় নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে মাঙ্কিপক্সের জন্য আলাদা করে কোনো গাইডলাইন দেওয়া হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন আছে। সেটি আমরা অনুসরণ করতে পারি। আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আর পরীক্ষার মাধ্যমে কারও শরীরে এটি শনাক্ত হলে চিকিৎসার পাশাপাশি ৫ থেকে ২১ দিন (তিন সপ্তাহ) কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনে থাকতে হবে।

অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার বলেন, আমরা জানি না-মাঙ্কিপক্স দেশে এলে কতটা ভয়াবহতা নিয়ে আসবে। ইতোমধ্যে আমরা করোনাভাইরাস, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গি মোকাবিলা করেছি। মাঙ্কিপক্সও যে ফর্ম বা ভেরিয়েশনেই আসুক না কেন আমরা এর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আছি।

ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানু বলেন, মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় (ট্রপিক্যাল) দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্স বেশি ছড়ায়। এতে সমকামীরা আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হলেও এটি অনেকটা একপেশে ধারণা। এতে অন্যরাও সংক্রমিত হচ্ছে। করোনাকালে আমরা যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেছি এটি প্রতিরোধেও আমাদের একইভাবে মানতে হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ নিয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে এলে সঙ্গে সঙ্গে যেন আমরা শনাক্ত করতে পারি সে ব্যবস্থা নিতে হবে। হাজিরা দেশে ফিরলে তাদেরও পরীক্ষা করাতে হবে। আবার আসন্ন ঈদে সীমান্তের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো পশুর মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স দেশে ছড়িয়ে না পড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর