আসামে ভয়াবহ বন্যা : দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন উল্টে গেল কাদা-পানির স্রোতে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চারদিকে ঘোলা বানের পানি; সেই সঙ্গে চলছে অঝোরে বৃষ্টি। তার মধ্যেই গাছ, কাঠ, ধ্বংসস্তূপ ঠেলে নিয়ে স্টেশনেই দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের উপর আছড়ে পড়ল সেই স্রোত, খেলনার মতো একের পর এক বগি উল্টে দিল। কন্টেন্ট শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে এই ভিডিও। আর এই ভিডিওই বলে দিচ্ছে, আসামের বন্যা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী বাজালি, বাকসা, কাছাড়, চরাইদেও, দারাং, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, ডিমা হাসাও, কামরূপ, কার্বি আলং, নওগাঁও, শোনিতপুর, মাজুলি এবং হোজাইসহ আসামের ২০ জেলায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক বন্যা। তবে এসব জেলার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হোজাই এবং কাছাড়ের।
আসাম রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, হোজাইয়ে মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন ৭৯ হাজার মানুষ। অন্য দিকে, কাছাড়ে বন্যা উপদ্রুত মানুষের সংখ্যা ৫২ হাজার।
এছাড়া রাজ্যের ২০ জেলার ৬৫২টি গ্রামে বন্যা উপদ্রুত মানুষের সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে রাজ্যের প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
কাছাড়ে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ডিমা হাসাওয়ে অতিবৃষ্টি ও বন্যার ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে আরও তিন জনের। ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে হাফলং এবং ডিমা হাসাও।
গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেস ডিমা হাসাও জেলার নিউ হাফলং স্টেশনে বন্যার কারণে আটকে পড়েছিল। ট্রেনে আটকে থাকা ১০০ যাত্রীকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, শিলচর-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের আর একটি ট্রেন ডিমা হাসাও এবং কাছাড় জেলার মাঝামাঝি স্থানে আটকে পড়ে।
গত ১৫ মে থেকে ডিমা হাসাও জেলার হাফলং শহরের সঙ্গে সড়ক, রেল যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ডিমা হাসাওয়ের অবস্থা অবশ্য আরও ভয়াবহ। বন্যার তীব্রতায় বর্তমানে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো অবস্থায় পৌঁছেছে এই জেলর।
বন্যার কারণে ডিমা হাসাওয়ের লামডিং-বদরপুর ট্রেন শাখা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে দক্ষিণ অসম, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরার রেল যোগাযোগ থমকে গিয়েছিল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল জানিয়েছে, দ্রুত পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর