তরমুজ চাষে ২ মাসে আড়াই লাখ টাকা আয় শৌখিন কৃষকের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেনীতে বাহারি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শৌখিন কৃষক আবুল খায়ের মিন্টু।

প্রকৌশলী মিন্টু দীর্ঘদিন ঠিকাদারি করতেন।

এখন সেখান থেকে কিছুটা অবসর নিয়ে নেমেছেন ফসলের মাঠে। বাংলালিংক জাতের ভেতরে হলুদ, অমিক্রন  ও সুইট মেলন জাতের তরমুজ চাষ করে তিনি হয়ে উঠেছেন ফেনী কৃষি বিভাগের দৃষ্টান্ত।

জেলার ফুলগাজী উপজেলার দরাবরপুর ইউনিয়নের ধলিয়া এলাকায় ৯৫ শতক জমিতে তিনি মাচায় বিশেষ পদ্ধতিতে  চাষ করেছেন ভিন্ন স্বাদের এই তরমুজ, মরুর ফল রক মেলন ও সাম্মাম।

আবুল খায়ের মিন্টু জানান চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে তিনি চাষাবাদ করেন সুইট মেলন, অমিক্রন ও বাংলালিংক জাতের তরমুজ৷ এপ্রিলের শেষের দিকেই ফলন উঠতে শুরু করেছে। মোট তিন হাজার তরমুজকে তিনি ব্যাগিং করেছেন। প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।

তিনি জানান, এ ৯৫ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করতে খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে আড়াই লাখ টাকা। যা ফলন হয়েছে তা বিক্রি করলে আসবে ৬ লাখ টাকার মতো। সে হিসাবে লাভের পরিমাণ হবে আড়াই লাখের বেশি।

মিন্টু আরও জানান, তার উৎপাদিত এ তরমুজগুলো বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। মানুষ ফসলের মাঠে এসেই কিনে নিয়ে যান। ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন,বর্তমানে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য কারিগরি সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝে চাষাবাদের আগ্রহ বাড়ছে। জেলাজুড়ে এখন পর্যন্ত মাঠের পরিবেশ ভালো। লাভের বিষয়টি বিবেচনা করেই কৃষকরা তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন। আশা করি আগামী বছরে আরো বেশি করে এ তরমুজ চাষাবাদ করবেন কৃষকরা।

তরমুজ কিনতে আসা আবু মিয়া নামের একজন জানান, তারা সারাজীবন ভেতরে লাল তরমুজ খেয়েছেন হলুদ তরমুজ খাননি। এবার তারা এই ভিন্ন স্বাদের তরমুজ খেতে পারছেন।

দিদার হোসেন জানান, কেজি ৭০ টাকা দামে তিনি তরমুজ কিনেছেন। দামে কিছুটা বেশি হলেও তাজা এবং খুব স্বাদের।

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোজ কান্তি দেব নাথ বলেন, আবুল খায়ের মিন্টুকে বীজ, সার ও সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি এসব জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন।

২ বছর আগে ইউটিউব ভিডিওতে চাষ দেখে আবুল খায়ের মিন্টু এই তরমুজ চাষে উদ্ধুদ্ধ হন। চলতি বছরে বাড়ির পাশে ৯৫ শতক জমি লিজ নেন। বারোমাসি ছোট আকারের মিষ্টি তরমুজের চাষ এ অঞ্চলের জন্য এটিই প্রথম।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, সাধারণ তরমুজের চেয়ে এই ফলের স্বাদ অনেক বেশি। এটি একটি পুষ্টিকর মিষ্টি ফল। কৃষকরা সঠিকভাবে এর চাষাবাদ করতে পারলে অনেক লাভবান হবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর