৩০ এপ্রিলের টিকিট পেতে দুদিন আগে থেকে লাইন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদ কেন্দ্র করে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির চতুর্থ দিন চলছে। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে নির্ধারিত কাউন্টারে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। আর এই লাইনে দেখা গেছে দুদিন আগে থেকে এসে দাঁড়ানো টিকিটপ্রত্যাশীও।

এ ছাড়া ৩০ এপ্রিলের টিকিট পেতে সোমবার থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন হাজারও টিকিটপ্রত্যাশী। আর লাইনে দাঁড়ানো এসব মানুষের বড় অংশই স্টেশন এলাকাতেই সেরেছেন ইফতার ও সেহরি। এমনকি অনেক নারীকেও আসতে দেখা গেছে সেহরির আগেই। তাদের সবার লক্ষ্য ৩০ এপ্রিলের টিকিটপ্রাপ্তি।

টিকিটের লাইনে দাঁড়ানো এসব মানুষের কাছে থেকে জানা গেছে অনেক বাজে অভিজ্ঞতার কথাও। টিকিট দেওয়ার সময়গুলোতে নিয়মিত চিৎকার তো আছেই। এমনকি জরুরি কাজে কিছুক্ষণের জন্য লাইন থেকে বের হলেই অনেকেরই হারাতে হয়েছে সিরিয়াল।

দুদিন আগে এসে দাঁড়ানো ব্যক্তিরা টিকিট না পেয়ে তার পরের দিনের টিকিটের জন্য লাইনের সামনে থেকেছেন। কিন্তু রাতে ঘুমিয়ে পড়ে হারাতে হয়েছে সেই সিরিয়াল। মেলেনি তার পরের দিনেরও টিকিট। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, টিকিটপ্রত্যাশীরাই লাইনের সিরিয়াল লিখে রাখছেন। সিরিয়াল মেইনটেইন করাই তাদের লক্ষ্য। লাইন ভেঙে কেউ দাঁড়াতে চাইলে পেছন থেকে অন্যরা বাধাও দিচ্ছেন। কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে যেন নিয়ম মানাটাই কষ্টের হয়ে পড়ছে।

স্টেশন এলাকায় লাইন ঠিক রাখতে একটু পর পর বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে সতর্ক করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি। কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধে স্টেশন এলাকায় তৎপর রয়েছে র্যাব, পুলিশ, ডিএমপি পুলিশসহ আনসার সদস্যরা। র্যাব-পুলিশের বুথও বসানো হয়েছে স্টেশন এলাকায়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বন্ধু মো. সোলাইমান ও আনাস ভূঁইয়া পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও খুলনায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাবেন তারা। অফিস ছুটি হবে ২৮ এপ্রিল। এর পর কিছু কেনাকাটা করে ২৯ এপ্রিল ট্রেনে করে বাড়ি যেতে লাইনে দাঁড়ান তারা। কিন্তু ৫ ঘণ্টা অপেক্ষার পরও মেলেনি আগাম টিকিট।

উপায় না পেয়ে পরের দিনের টিকিটের প্রত্যাশায় লাইনে দাঁড়িয়ে গুনছেন অপেক্ষার প্রহর। লাইনে একদিন বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে রেলস্টেশনেই সেরেছেন ইফতার-সেহরি।

সোলাইমান গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ৪টার পর পরই স্টেশনে আসেন তিনি। এত আগে এসেও দেখেন, লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকশ টিকিটপ্রত্যাশী। তার পরও আশা করেছিলেন টিকিট পাবেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পাননি। সোমবার দুপুর থেকে আবারও লাইনে দাঁড়ান তিনি। পরের দিন টিকিট পেতে মঙ্গলবার কাউন্টারের সামনের সারিতে আছেন তিনি। আশা করছেন আজ হয়তো মিলবে টিকিট।

এমন আরেক টিকিটপ্রত্যাশী উম্মে হাবিবা ঈদ করতে যাবেন রাজশাহীতে। তিনি সিল্কসিটি, ধুমকেতু বা পদ্মা এক্সেপ্রেসের টিকিট নিতে এসেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, নারীদের জন্য এবার দুটি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে কাউন্টারের তুলনায় টিকিটপ্রত্যাশীদের সংখ্যা অনেক বেশি। এ কারণে রাত ২টার পর পরই তিনিসহ কয়েকজন আসেন টিকিটের লাইনে। এখানেই সেহরি খেয়েছেন তারা। আনন্দ আর আড্ডায় সময় কাটছে তাদের।

বুধবার ২৭ এপ্রিল দেওয়া হবে ১ মের অগ্রিম টিকিট। এ ছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মের ট্রেনের টিকিট। ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে। এবারের ঈদযাত্রার সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার থেকে বিশেষ ট্রেনের টিকিটও বিক্রি শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর