দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পর্তুগালে নিম্নআয়ের মানুষ বিপাকে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পর্তুগালের বাজারে ইউক্রেন এবং রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সাত দফায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে নিম্নআয়ের মানুষের সীমিত আয় দিয়ে জীবন নির্বাহ দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। গত ১৪ এপ্রিল পর্তুগালের ভোক্তা অধিকার রক্ষা অ্যাসোসিয়েশন ডেকো প্রেটেস্ট তাদের সমীক্ষায় চালানো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চিত্র প্রকাশ করেছে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, যুদ্ধ শুরুর আগের দিন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের পরিপূর্ণ একটি ঝুড়ির সমপরিমাণ পণ্য ক্রয় করতে প্রয়োজন হতো ১৮৩ ইউরোর কিছু বেশি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮,৩০০ টাকার মতো এবং ৭ দফায় বেড়ে গত ১৩ ই এপ্রিল এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০২ ইউরো; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০,২০০ টাকার সমতুল্য প্রায়। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্যপণ্যের তারতম্য ভেদে প্রায় ৬৩ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী।

দেশটির নাগরিকদের খ্রিস্টধর্মের বড় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে হঠাৎ করেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সবাইকে এক ধরনের মানসিক চাপের মুখে ফেলেছে। প্রতি বছরই বেতন বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রব্যমূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পায়, তবে বর্তমানে তা নিম্নআয়ের মানুষের জন্য খুবই অসামঞ্জস্য। উক্ত উৎসব পালনের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোতে দাম ছিল অস্বাভাবিক এবং অপ্রতুল।

ইউক্রেনের কাছ থেকে প্রধান খাদ্যপণ্য আমদানি নির্ভরতা এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে হঠাৎ করেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তবে পরবর্তী মহামারীর কারণে ও মজুত স্বল্পতায় অনেকাংশে দায়ী। জানুয়ারি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে উৎপাদন এবং পরিবহনেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। উপকূলবর্তী দেশটিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাছের দামের স্থিতিশীলতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মাছধরা জাহাজের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছের মূল্যেও এর প্রভাব পড়েছে।

এখানে বসবাসরত নিম্নআয়ের মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই মূল্যবৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, এখানে আমার নিজের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে অবস্থিত পরিবারকে আগের চেয়ে কম অর্থ প্রেরণ করতে হবে; যা রমজান মাসে পরিবারকে একটি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত নাগরিক মারিয়া জোজে জানান, যে পরিমাণ অবসর ভাতা পাই হঠাৎ এই দামের তারতম্য আমাদের আনন্দগুলো ছিনিয়ে নিয়েছে। যুদ্ধর বিষয়টি কোনোভাবেই তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বলেছেন, সরকার আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে তা এড়ানো যেত। একই মতামত প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন স্থানীয় নাগরিক। তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খুব শীঘ্রই পরিবর্তন হবে যুদ্ধাবস্থার অবসান হলে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর