মহামারি ও দুর্যোগ থেকে বাঁচার আমল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মহামারি দুর্যোগ আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনের জন্য পরীক্ষা। এ সময়ে মুমিনদের সবর বা ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সবর বা ধৈর্য একটি মহান গুণ। এই গুণটি ছাড়া মানুষ দুনিয়া-আখিরাতে সফলতা লাভ করতে পারে না। যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তিকে কাবুর মধ্যে রাখতে পারে তার জন্য রয়েছে বিশাল সুসংবাদ।

কুরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদাররা! ধৈর্য ধারণ কর এবং মোকাবিলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর।’ (সূরা আলে ইমরান-২০০)।

করোনাভাইরাসের কারণে গোটা পৃথিবী বিপর্যস্ত। এক কঠিন সময় পার করছি আমরা। এ কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের সবর-ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) যখনই কোনো কঠিন সমস্যা বা বিপদের সম্মুখীন হতেন, তখনই আল্লাহর কাছে একান্তভাবে প্রার্থনা করতেন। বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, এমন অনেক দোয়া পবিত্র কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। দোয়াগুলো ছোট, সহজে মুখস্থও করা যায়।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যহ সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার করে এ দোয়াটি পাঠ করলে কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মায়াসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি, ওয়ালা ফিস-সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’ অর্থ : ‘আল্লাহর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ)।

হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) যখন কোনো সম্প্রদায় দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করতেন তখন বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউজুবিকা মিন শুরুরিহিম। অর্থ, ‘হে আল্লাহ! আমরা তোমাকেই তাদের মুখোমুখি করছি এবং তাদের অনিষ্টতা থেকে তোমারই কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।’ (আবু দাউদ ও নাসাই)।

হজরত উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, মানুষের ওপর কোনো বিপদ এলে যেন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা দোয়া পাঠ করে, তখন আল্লাহতায়ালা তাকে তার বিপদ দূর করে দেন এবং সে যা কিছু হারিয়েছে, তার বদলে তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করেন।’

রাসূলুল্লাহ (সা.) বিপদের সময় পাঠ করতেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি-ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরম সহিষ্ণু ও মহাজ্ঞানী। আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি মহান আরশের প্রভু। আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, তিনি আকাশমণ্ডলী, জমিন ও মহাসম্মানিত আরশের প্রভু।’ (সহিহ্ বুখারি ও মুসলিম)

বিপদের সময় মহানবি (সা.) দোয়াগুলো উম্মতদেরও পাঠ করতে বলেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।’ (দোয়া ইউনূস)। অর্থ, ‘একমাত্র তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই আমি সীমালঙ্ঘনকারী।’ (তিরমিজি : ৩৫০০)।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর