ব্যক্তি উদ্যোগে ১০০ ব্রিজ তৈরির ঘোষণা ব্যারিস্টার সুমনের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রামগঙ্গা চা বাগানের শ্রমিকদের বসতভিটা থেকে প্রধান সড়কে যাতায়াতের জন্য ছড়ার ওপর একটি ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। ১৪ বছর পূর্বে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারিভাবে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও নির্মাণ ত্রুটির জন্য সেটি উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ে। এরপর অনেক জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

শ্রমিকরা যোগাযোগ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সাথে।

খবর পেয়ে সুমন সেখানে আরেকটি কাঠের সেতু তৈরি করে দেন। দুই বছর পর সেটিও ভেঙে যায় প্রবল বর্ষণে। এবার আর কাঠ নয়, ব্যারিস্টার সুমন ব্যক্তিগত অর্থায়নে সেখানে তৈরি করেন একটি পাকা সেতু। শত শত চা শ্রমিকের উপস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে উদ্বোধন হয় সেতুটি। সেটি সুমনের ব্যাক্তিগত উদ্যোগে তৈরি ৩৬তম সেতু। এর মাঝে পাঁচটি পাকা এবং ৩১টি হলো কাঠের সেতু।

শুক্রবার বিকেলে ফিতা কেটে উদ্বোধক হিসেবে ব্রিজটি উদ্বোধন করেন ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান নার্গিস আহমেদ। চুনারুঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্করের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি বশির আহমেদ। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, ইউপি চেয়ারম্যান রুমন ফরাজি ও নারী নেত্রী এ্যানি লস্কর বক্তৃতা করেন।

রামগঙ্গা চা বাগানের শ্রমিক মীনা কর্মকার বলেন, ‘সেতুটি তৈরি হওয়ায় আমাদের প্রধান সড়কে যাতায়াতে এক ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। সেতু না থাকলে বর্ষাকালে অনেক কষ্ট হতো যাতায়াত ও গবাদি পশু নিয়ে যেতে। ‘ তিনি ব্যারিস্টার সুমনের প্রতি বাগানবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘২০১৬ সালে চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ চা বাগানের সিনাইবিলে প্রথম ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাঠের ব্রিজ তৈরি করেছিলাম। ৩৬টি ব্রিজ করতে আমার কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে। ভাঙা রাস্তা মেরামতেও আরো কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আমার স্বপ্ন হলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে অন্তত ১০০ সেতু তৈরি করা। সুযোগ পেলে প্রমত্তা খোয়াই নদীর ওপরও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেতু করার ইচ্ছা রয়েছে। ‘

তিনি আরো বলেন, ‘এলাকার দরিদ্র মানুষের এই কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি লেখাপড়া ও খেলাধুলার উন্নয়নে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নিজের উপার্জনের অর্থ যতটুকু পরিবারের জন্য প্রয়োজন তার অতিরিক্ত অর্থ জনকল্যাণে ব্যয় করাই আমার ইচ্ছা। ‘

প্রধান অতিথি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট শিল্পপতি বশির আহমেদ ব্যারিস্টার সুমনের এই উদ্যোগ দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং নিজেও এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এত দিন ফেসবুকে দেখেছি ব্যারিস্টার সুমনের ভালো কাজ। আজ সচক্ষে দেখেছি, অতুলনীয়। সুমনের মাধ্যমে একটি এলাকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষ এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পেয়েছে। ‘

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর