হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফরিদপুর সদর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছে শতাধিক পরিবার। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রায় সারাবছরই পানিবন্দি থাকতে হয় তাদের। বাড়ির উঠানে পানি জমে থাকায় ঘরবন্দি থাকতে হয় শিশু-কিশোরদের। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে। অনেক পরিবার নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কোনোমতে চলাফেরা করছেন।
উপজেলার ডিগ্রিরচর ইউনিয়নের আইজুদ্দিন মাতব্বর ডাংগী পূর্ব গ্রাম ও সংলগ্ন তাইজুদ্দিন মুন্সির ডাংগী গ্রামের শতাধিক পরিবার দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মালেক সর্দারের বাড়ির সামনে বালুর বস্তা ও আবর্জনা ফেলে কেউ ডপানি বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে বানু ফকিরের এলাকায় কালভার্টের প্রবেশমুখে বালুর বস্তা ফেলে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ৭-৮ বছর ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছে শতাধিক পরিবার। জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদও ব্যাহত হচ্ছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ কেয়া বেগম বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে পানিতে ডুবে আছি। ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগ সময় পানি মাড়িয়ে স্কুলে যেতে হয়। ঘরের চারপাশে থৈ থৈ পানি থাকায় পোকামাকড়ের আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন জমিতে পানি থাকায় ফসল ও শাকসবজি আবাদ করতে পারছি না।’
হোসনে আরা খাতুন নামের আরেকজন বলেন, ‘পাঁচ ছয় বছর হলো আমার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই পানিবন্দি অবস্থা দেখে আসছি। এখন আরও ভোগান্তি বেড়েছে। আজ পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সমাধান হয়নি।’
স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার পাঞ্জু সেখ বলেন, বর্ষা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য গ্রামে দুটি কালভার্ট রয়েছে। কালভার্ট দিয়ে পানি নেমে যেতো। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েক প্রভাবশালী বালু ফেলে জমি ভরাট ও নিয়মনীতির বাইরে জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করায় এলাকার পানি কোথাও যেতে পারছে না। ফলে কয়েকশ পরিবার পানিবন্দি জীবনযাপন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। প্রভাবশালীদের ক্ষমতার কাছে কুলিয়ে উঠতে পারিনি।’
এ বিষয়ে ডিগ্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্য। আগামী সাতদিনের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বড় পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে মানুষের ভোগান্তি দূর করা হবে। একই সঙ্গে পরিবারগুলোর যেন আর ভোগান্তির শিকার হতে না হয় সেজন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।