আওয়ামী লীগের সদস্য জয়নাল হাজারী যে কারণে বিয়ে করেননি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ফেনী-২ আসন থেকে তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন হাজারী। আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়েই কেটেছে যার রাজনৈতিক অধ্যায়।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৮৬ বছর বয়সী এই প্রবীণ নেতা।

১৯৪৫ সালের ২৪ আগস্ট ফেনী শহরের সহদেবপুরে জন্ম নেন জয়নাল হাজারী।তার পিতা আবদুল গণি হাজারী ও মাতা রিজিয়া বেগম।

আলোচিত জয়নাল আবেদীন হাজারী ছিলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালে ২নং সেক্টরে রাজনগর এলাকায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর রাজনগরে গিয়ে ওই এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে তিনি একটি সিভিল ডিফেন্স টিমও গঠন করেছিলেন।

কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন ‘চিরকুমার’। কলেজ জীবনে প্রেমিকা বিজুকে হারিয়ে তার বিরহে আর বিয়ে করেননি বলে দাবি করেছিলেন তিনি।

একটি টিভি অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমি আর বিজু একইসঙ্গে পড়তাম। আমি যখন কলেজের ছাত্র ছিলাম তখন বিজুও কলেজের ছাত্রী ছিল। আমি গান লিখতাম এবং বিজু গান গাইতো।সে খুব ভাল গান গাইতে পারত। এভাবেই প্রথমে আমাদের দুজনের পরিচয় হয়। পরে আমাদের ভালোবাসা হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য আমি যখন যুদ্ধে চলে যাই তখন তারা সোনাগাজী এলাকায় আত্মগোপন করেন।

পরে একজন রাজাকার তাকে জোর করে বিয়ে করেছিলো বলে জানতে পারি। বিজুর সঙ্গে কথা হয়েছিল আমরা কেউ কাউকে ছাড়া বিয়ে করবো না। তবে যুদ্ধের সময়ে আমি সংবাদ পেয়েছিলাম তার বিয়ে হয়ে গেছে। চাইলে জোর করে এনে আবারও বিয়ে করতে পারতাম। কিন্তু তা আমি করিনি। বিজু আমাকে যে ওয়াদা করেছিল তা ভেঙেছে। এরপরে কখনো বিয়ে বা কোন নারী নিয়ে চিন্তাই করিনি।

জয়নাল হাজারী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফেনী-২ (সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে ১৯৯৬ সালের পর তিনি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন।

২০০৪ সালের এপ্রিলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে অবশ্য ২০১৯ সালের অক্টোবরে আবারও তাকে দলে জায়গা দেয়া হয়। তাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যের পদ দেয়া হয়।

জয়নাল হাজারীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর