বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি টাকার অভাবে অনিশ্চিত সোহাগী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিন আনি দিন খাই’ পরিবার। সেই প্রতিকূলতাই হয়তো আরও জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল সোহাগী আখতারের। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চৌধুরী আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী সোহাগী এ বছর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

কলেজ থেকে গোটা গ্রাম যখন তার সাফল্যে খুশিতে ভাসছে তখন সোহাগী কিছুটা বিভ্রান্ত। সামনে পড়ার খরচ জোটাবেন কেমন করে সেই দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম নেই তার।

বাবা উপজেলার পলিপাড়া মহল্লার ছফির উদ্দিন অটোরিকশা চালান। মা জাহেরা বেগম গৃহিণী। সোহাগী ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম। এখন ঘরে চার পেট। আয় একজনের। শুধু অটোরিকশা চালিয়ে কতইবা আর আয় হয়। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারের মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় এখন চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে পরিবার।

দামি গাড়ি, বড় বাড়ি কিংবা ভালো-মন্দ খাওয়া নয়, সোহাগী অর্থনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখন। চোখ বুঝলেই ভেসে ওঠে অর্থনীতির ফর্মুলা কিংবা সমাজ বিজ্ঞানের কঠিন পরিচ্ছেদ। এগুলোকেই সিঁড়ি করে আকাশ ছুঁতে চান তিনি। কিন্তু বাস্তবের মাটি বড় শক্ত। দারিদ্র্য দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে আকাশ আর তার স্বপ্নের মধ্যে। কোনো জানা ফর্মুলা দিয়েই এ সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না তিনি।

সোহাগী বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার খুব ইচ্ছে আমি মাস্টার্স পাস করে সরকারি চাকরি করবো। এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় আমি পড়াশোনা চালিয়ে এত দূর এসেছি। এবারের গুচ্ছ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আমি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬তম স্থান অর্জন করেছি। আমার ইচ্ছে, আমি সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো।

তিনি জানান, জানুয়ারির মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু তার পরিবারের যা আর্থিক অবস্থা, তাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যাওয়া আসা-মিলে অন্তত ২০ হাজার টাকা দরকার। অথচ তার কাছে কোনো টাকাই নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনার জন্য কেউ যদি পাশে দাঁড়াতেন, তাহলে তিনি পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারতেন।

এদিকে তার এই অসচ্ছলতার খবর শুনে রোববার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম সম্পা ও মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এখন তার কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর