২০ টাকার টিকিট এখন ১০০ টাকা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনার মহামারির কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর খুলেছে পুরান ঢাকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান আহসান মঞ্জিল। আহসান মঞ্জিলে প্রবেশের টিকিট করোনার আগে কাউন্টার থেকে বিক্রি হলেও এখন অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। তবে অনলাইনে সেই টিকিট কিনতে পারছেন না দর্শনার্থীরা। কালোবাজারে চার পাঁচগুণ বেশি দামে তা বিক্রি হচ্ছে আশপাশের হকার-চায়ের দোকানদার কাছে। ফলে প্রতিনিয়ত টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।

দর্শনার্থীদের অভিযোগ, অনলাইনে টিকেট কাটতে ভোগান্তি, সার্ভার ডাউন ও প্রতিদিন অল্প সময়ের মধ্যে টিকিট শেষ হয়ে যায়। অনলাইনে টিকিট না পাওয়ায় ব্ল্যাকে (কালোবাজার) ২০ টাকার টিকিট চার-পাঁচগুণ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

নড়াইল থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় ঘুরতে আসা শাফায়াত হোসাইন  বলেন, ‘জাতীয় জাদুঘরে গিয়ে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহের বিড়ম্বনায় ব্যর্থ হয়ে আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে আসি। এখানে এসেও জানতে পারি অনলাইনেই টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। অনেক কষ্ট নিয়মকানুন জেনে ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখি, আজকের সব টিকিট বিক্রি শেষ। পরে আশপাশের দর্শনার্থীদের থেকে জেনে ব্ল্যাকে ২০ টাকার টিকিট ১০০ টাকা করে কিনে ভেতরে প্রবেশ করেছি।’

নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক দর্শনার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখনো দেশের সব বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ অনলাইনের ব্যবহারে ততটা পারদর্শী নয়। এসব ঐতিহ্যবাহী স্থানে ঢুকতে কেন অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে? শুধু তাই নয়, সেটা প্রিন্ট করে এনে তাদের দিতে হবে। এখানে কোনো কম্পিউটারের দোকানও নেই। তাহলে এখন কোথায় যাবো আমরা? তারা বলছে, অনলাইনে টিকিট শেষ। অথচ এখানে কিছু লোক বলছে, ১০০-১৫০ টাকা করে দিলে নাকি কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।’

 

সরেজমিনে দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে আসা কয়েকশো দর্শনার্থী আহসান মঞ্জিলের গেটে অপেক্ষা করছেন। কেউ ভাগ্যক্রমে অনলাইনে টিকিট কিনতে পেরেছেন, কেউ আবার সংগ্রহ করতে না পেরে এদিক-সেদিক টিকিটের জন্য ছোটাছুটি করছেন। অনেককেই অনলাইনে টিকিট না পেয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে টিকিট নিতে দেখা গেছে। অধিকাংশ দর্শনার্থীর অভিযোগ, অনলাইন সিস্টেমে জটিলতা, সার্ভার ডাউন ও একটি চক্র আগে থেকেই টিকেট সংগ্রহ করে সেগুলা ব্ল্যাকে বিক্রি করেন।

আহসান মঞ্জিলের উপ-কিপার সিরাজুল ইসলাম  বলেন, ‘আজ শুক্রবার এমনিতেই ভিড় বেশি। অনলাইনে টিকিট অপর্যাপ্ত থাকায় এই ভোগান্তি হচ্ছে। অন্যান্য দিন এমন ভিড় থাকে না।’

ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে আশপাশের কিছু কম্পিউটারের দোকান সকাল ৯টায় বেশি করে টিকিট কিনে দুই-তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করে। যার ফলে সাধারণ দর্শনার্থীরা টিকেট পান না। আমরা এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে পরে ব্যবস্থা নেবো।’

এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব তো এটা না।’ তিনি এ ব্যাপারে আহসান মঞ্জিল প্রশাসনের সঙ্গে বা ওখানকার টহল পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর