হাওর বার্তা ডেস্কঃ পারিবারিক পুষ্টি বাগান। কৃষিতে এক নতুন দিগন্ত। প্রথমে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে করা হয়েছে। আবার বাড়তি ফসল বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে। খুলনায় কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত ও পরিবারের নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণে গড়ে তোলা হচ্ছে এ বাগান।
কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের সহযোগিতায় ‘অনাবাদি পতিত জমি ও বসত বাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পে’র আওতায় খুলনা জেলার নয় উপজেলায় দুটি ধাপে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ শতাধিক বাগান। ইতোমধ্যে কালিকাপুর মডেলের এসব বাগান থেকে শাকসবজি আহরণ শুরু করেছেন চাষিরা। উৎপাদিত সবজি দিয়ে তারা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে আয়ও করছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্র আরও জানায়, পর্যায়ক্রমে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ১০০ পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হবে। বর্তমানে দুটি ধাপে পাঁচ শতাধিক বাগান তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিটি বাগানে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর পাঁচটি ও দুই মাথায় দুটি বেড রয়েছে। এছাড়া দুই পাশে মাচা রয়েছে। বেডে লাগানো হচ্ছে শাক-সবজি ও মাচায় লাউ-কুমড়া-সিম-বরবটি-ঝিঙা। তাছাড়া দুই মাথায় নিটি করে ছয়টি ফল ও মসলার চারা রোপণ করা হয়েছে। তবে কোথাও কোথাও ফলের চারা বাগানের বাইরে অন্যত্র লাগানো হয়েছে। শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে লাল শাক, গীমা কলমি, পুঁইশাক, ডাটা শাক, ধনিয়া, কাঁচা মরিচ, মুলা। ফলদ ও মসলা উৎপাদনে মাল্টা, থাই পেয়ারা, কদবেল, ছফেদা, চুইঝাল, বাতাবী লেবুর চারা লাগানো হয়েছে।
রূপসা উপজেলার জাবুসার সুবিধাভোগী কৃষক মনোজ শিকদার জানান, বর্ষাকালীন সবজি তোলা হয়েছে। সন্তোষজনক উৎপাদন হয়েছে। প্রতিমাসে তিনি তার ৫ সদস্যের পরিবারের ১৫/২০ দিনের সবজির চাহিদা এখান থেকে মেটাতে পারছেন। এছাড়া মাঝেমধ্যে কিছু বিক্রি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস কিনছেন।
রূপসার অন্য এক সুবিধাভোগী মো. অহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির আঙিনায় কৃষি অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী সবজি চাষ করেছি। বেশ কিছুদিন ধরে বাজার থেকে আমাকে শাকসবজি কিনতে হয় না।
কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের কৃষক রাজ কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কিছুদিন আগে বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করেছি। আশা করছি নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কিছু সবজি বিক্রি করতে পারবো। এর আগেও আমরা তরিতরকারি লাগাতাম, তবে সেটা এত উন্নতভাবে নয়।
কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, উন্নতমানের বীজ, ফল ও মসলার চারা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় সার এবং বেড়া বাবদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এ উপজেলায় ২৭টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি জানান, রূপসা উপজেলায় জুন মাসে প্রকল্প শুরু হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে ২৮টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নে ১০০ বাগান স্থাপন করা হবে।