পীরগাছায় মসলিন তুলা চাষে নতুন সম্ভাবনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মসলিন তুলা, রংপুরের কৃষিতে একটি নতুন সম্ভাবনার নাম। নানা ফসলের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া এ তুলা চাষ এখন কৃষকদের অর্থকরী ফসল হিসেবে স্থান পেয়েছে পীরগাছার মাটিতে। মাত্র ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচে লাভ হয় প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ১০ জন কৃষক এসব প্রকল্পে তুলা চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি প্রকল্পে ৩৩ শতাংশ করে জমি রয়েছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মোট ১০টি প্রদর্শনী প্রকল্প এখন মসলিন তুলা চাষের নতুন ক্ষেত্র।

প্রায় ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিংহভাগ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। সম্প্রতি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এ তুলা চাষে নতুন করে সম্ভাবনা দেখা দেয়। বর্তমানে মসলিন তুলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল, যা বস্ত্র শিল্পে প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ গ্রামের কৃষক ইব্রাহীম আলীর ক্ষেতে গাছে গাছে দুলছে তুলার গোটা। তার ৩৩ শতাংশ জমিতে সিবি হাইব্রিড-১ জাতের মসলিন তুলা চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় তার জমি এখন তুলায় পরিপূর্ণ। গাছ ও পাতায় ঢেঁকে গেছে গোটা পুরো ক্ষেত। সম্ভাবনাময় হিসেবে উঁকি দিচ্ছে ফুল ও ফল। আর ক’দিন পরেই ঘরে উঠবে কাঙ্ক্ষিত ফসল।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তুলা চাষের মাত্র ১১০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে তুলা বোল ফুটতে শুরু করে। যা ৩ থেকে ৪ বারে সম্পূর্ণরূপে ফোটার পর গাছে শুকিয়েই তোলা যায়। এতে আঁশ ও বীজের মান অটুট থাকে। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়।

তুলা চাষী ইব্রাহীম আলী বলেন, প্রথমে তুলা চাষে রাজি ছিলাম না। পরে কৃষি অফিসের স্যাররা নানা পরামর্শ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় তুলা চাষ করেছি। গাছ ও ফুল দেখে আমি আশাবাদী। ভালো ফলন হবে। তুলার ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা সবসময় পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

পারুল ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামসুজ্জামান বলেন, মসলিন তুলা বেশ লাভজনক ফসল। প্রতি একরে ৩৫ থেকে ৩৮ মণ তুলা উৎপাদন হয়। প্রতি মণ ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে সহজে বিক্রি করা যায়। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে এসব তুলা কেনেন। আবার তুলার গাছ এবং পাতা দিয়ে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি গবাদিপশু ও মাছের খাদ্য হিসেবে খৈল তৈরি করা যায়। তা থেকেও আয় সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, উপজেলায় তুলা চাষের জন্য ১০ জনকে জমি তৈরি ও বীজ বপনের জন্য ২৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। তুলা অর্থকরী ফসল হিসেবে আগামী দিনে আরও চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে। এ থেকে কৃষকরা অল্প খরচে অধিক লাভের মুখ দেখবে বলে আমরা আশাবাদী ।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর