পদ্ম ফুলেই জীবিকা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোরে সাত বছরের সন্তান আশিককে নিয়ে বিলে পদ্ম ফুল তুলতে বের হন ষাটোর্ধ আমজাদ হোসেন। সকাল পর্যন্ত ফুল সংগ্রহ করেন তিনি। ছোট্ট শিশুটিকে নিয়ে ক্র্যাচে ভর করে স্কুল-কলেজ আর রাস্তায় ঘুরে ফেরি করে সেই ফুল বিক্রি করেন। তাতে আয় হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

এক পা হারানো আমজাদের বেঁচে থাকা সংগ্রামের এ চিত্র প্রতিদিনের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমজাদের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পোয়ালশুড়া গ্রামে। সেখানে আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির দুই শতাংশ জায়গায় একটা ছাপড়া তুলে বসবাস করছেন। পরিবারে স্ত্রী রাশিদা (৫৫) ও শিশু সন্তান আশিক রয়েছেন। ফুল বিক্রি করে যে আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন। টাকার অভাবে ছোট্ট শিশুকে লেখা পড়া করাতে পরছেন না। বড় তিন ছেলে বিয়ে করে অনেক আগেই পৃথক সংসার করছেন।

পঙ্গু আমজাদ জানান, আশির দশকে বাম পায়ে ঘা হওয়ায় তা কেটে ফেলতে হয়। তার পর থেকে তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। অন্যের সহযোগিতায় কোন রকমে দিন পার করছেন। গত এক যুগ ধরে সিধুলী বিলের পদ্ম ফুলেই তার জীবিকা অর্জন হয়। বর্ষায় পদ্ম ফুল বিক্রি আর অন্য মৌসুমে মেম্বার-চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় কাটে জীবন।

স্ত্রী রাশিদা বেগম জানালেন, তাদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে ছাপড়া পেতে বসবাস করছেন। পা হারানোর পর থেকে তার স্বামী কোনো কাজ করতে পারেন না।

ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, আমজাদ দীর্ঘদিন ধরেই পদ্ম ফুল বিক্রি করছেন। তার অসহায়ত্ব দেখে পরিষদ থেকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতাও করা হয়েছে। নতুন বরাদ্দ এলে তাকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর