অপরূপ ‘হাকালুকি’ সহজেই মন কাড়ে মানুষের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাকালুকি হাওর প্রকৃতির এক অনন্য সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। অপরূপ হাকালুকি যে কারোরই সহজে মন কেড়ে নেয়।

হাকালুকি’ দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর। সঠিক পরিকল্পনা হাতে নিলে, ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ করলে ‘হাকালুকি’ হতে পারে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এই হাওর থেকেই বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব।

১৮ হাজার ১শত ৫০ হেক্টর আয়তনের হাকালুকি হাওরে রয়েছে ২৩৮টি বিল।  সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ৬টি উপজেলা নিয়ে এর অবস্থান। মৌলভীবাজারে ২০০ আর সিলেটে রয়েছে ৩৮টি বিল। হাওরের ৮০ ভাগ মৌলভীবাজারে আর ২০ ভাগ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। মৌলভীবাজারের বড়লেখা অংশে ৬০ ভাগ, কুলাউড়ায় ১২ ভাগ ও জুড়ী উপজেলায় রয়েছে ৮ ভাগ।

হাওর অবলোকনের জন্য মধ্যখানে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। পর্যটকরা এখান থেকে সূর্যাস্ত অবলোকন করেন।

হাকালুকি হাওর বেড়াতে আসা মুজাহিদ ইসলাম বলেন, পরিকল্পিতভাবে এশিয়ার বৃহত্তম এই হাওরকে সাজানো হলে প্রতিনিয়ত আগমন ঘটবে হাজারো পর্যটকের।  রাজধানীসহ দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে আকর্ষণীয় এই স্থানটি দেখার জন্য এখানে যে বা যারা আসছেন, নিজ উদ্যোগে ঝুঁকি নিয়ে আসছেন।   রাত্রী যাপনের জন্য কোনো হোটেল-মোটেল না থাকায় হাকালুকিতে ভ্রমণে যেতে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন।

স্থানীয়দের দাবি- যাতায়াত, পর্যটকবাহী ইঞ্জিন চালিত নৌকা, খাবার ও রাত্রী যাপনের ব্যবস্থা নিলে প্রতিদিন আগমন ঘটবে হাজারো পর্যটকদের।

জানা যায়, হাকালুকি হাওরে ৫২৬ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪১৭ প্রজাতির পাখি (এর মধ্যে ১১২ প্রজাতির অতিথি পাখি ও ৩০৫ প্রজাতির দেশীয় পাখি) রয়েছে। এছাড়া ১৪১ প্রজাতির অনান্য বন্যপ্রাণী, ১০৭ প্রজাতির মাছ রয়েছে।  তন্মধ্যে ৩২ প্রজাতির মাছ বিপন্নপ্রায়। এছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের কীট-পতঙ্গ, জলজ ও স্থলজ ক্ষুদ্র অনুজীব।

এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, হাকালুকি হাওরকে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমার মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। হাওরের উন্নয়নের জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করা যায় খুব শিগগিরই উন্নয়ন হবে।

যেভাবে যাবেন: রাজধানীর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ৩টা ট্রেন ছাড়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে। ট্রেনের ভাড়া প্রকার ভেদে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর সময় লাগবে ৭-৮ ঘণ্টা। ট্রেনে গেলে রাত সাড়ে ৯টার উপবন এক্সপ্রেসে যাওয়াই সবচেয়ে ভালো। কুলাউড়া রেল স্টেশন থেকে অটোতে করে চলে যেতে পারেন হাওরে। এছাড়া বাসেও যাওয়া যাবে। সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী থেকে বাসে প্রথমে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী বা বড়লেখায় আসতে হবে। কুলাউড়া, জুড়ী অথবা বড়লেখা থেকে অটোতে করে চলে যেতে পারেন হাকালুকিতে। কুলাউড়া থেকে অটোরিকশায় সরাসরি ভুকশিমইল, ভাটেরা অথবা কন্ঠিনালা এলাকা হয়ে হাওরে চলে যেতে পারেন। রাতে আসলে কুলাউড়ায় অনেক হোটেল আছে সেগুলোতে আপনি রাত্রিযাপন করে পরের দিন ভোরে সূর্যোদয়ের সময় গেলেও হাওরের অপরূপ দৃশ্য দেখতে পারবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর