যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা চুক্তিতে কঠোর বাস্তবতার মুখে ফ্রান্স

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফ্রান্সের কাছ থেকে এক ডজন সাবমেরিন কেনা নিয়ে পাঁচ বছর আগে করা একটি চুক্তিকে হঠাত্ পাশ কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়া যেভাবে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তি করেছে, তাতে পশ্চিমা বিশ্বের মৈত্রী, ঐক্য এবং আস্থা সমূলে নাড়া খেয়েছে। ক্ষুব্ধ এবং অপমানিত ফ্রান্স ক্যানবেরা এবং ওয়াশিংটন থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত ডেকে পাঠিয়েছে, ব্রিটেনের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সংলাপ বাতিল করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এরপর ফ্রান্স কী করবে?

প্যারিসে বিবিসির সংবাদিক বলেছেন, বিড়ম্বনা এবং অপমানের প্রথম ধাক্কা সামলে ওঠার পর ফ্রান্সকে ভীষণ অপ্রিয় কঠোর কিছু প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে। প্রথমত, ফরাসিদের হয়তো নতুন করে অনুধাবন করতে হবে যে ভূ-রাজনীতিতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার বেলায় আবেগের তেমন কোনো জায়গা নেই।

অস্ট্রেলীয়দের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, চীনের কাছ থেকে নিরাপত্তার ঝুঁকির মাত্রা যেভাবে বেড়েছে, তাতে ডিজেলচালিত ফরাসি সাবমেরিনে তাদের চলবে না, বরং আধুনিক পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন দিয়ে চীনকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

তবে ফরাসিরা অস্ট্রেলিয়ার এই যুক্তি গ্রহণ করেনি। তাদের কথা, অস্ট্রেলিয়ার চাহিদা মতোই ডিজেলচালিত সাবমেরিনের তৈরি নিয়ে তারা কাজ করছিল এবং অস্ট্রেলিয়া চাইলে পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তারাও সরবরাহ করতে পারত।

রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যে চুক্তি হয়েছে, তা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই দেশ তিনটির মধ্যে কথবার্তা চলছিল। ফ্রান্স বলছে, অস্ট্রেলিয়া সেই ইঙ্গিত কখনোই তাদের দেয়নি।

 

লন্ডনের দৈনিক গার্ডিয়ানের কূটনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক প্যাট্রিক উইনটর লিখেছেন, শুধু অস্ত্র বিক্রির চুক্তি হারানো নিয়েই ফ্রান্স যে ক্ষুব্ধ তা নয়, অকাস চুক্তি দেখিয়ে দিয়েছে যে পারমাণবিক প্রযুক্তি নিয়ে আমেরিকা ফ্রান্সকে বিশ্বাস করে না। সে কারণেই হয়তো ফরাসি পরারাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ ল্য দ্রিঁয়া অকাস চুক্তিকে ‘পিঠে ছুরি মারার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর