বুড়িগঙ্গার ভাসমান হোটেল গরিবের কাছে যেনো পাঁচতারকা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভাত খেলে রাত্রিযাপন ফ্রি। নিম্নআয়ের মানুষের কাছে তাই জনপ্রিয় ছিল বুড়িগঙ্গার ভাসমান হোটেল। দিন পাল্টেছে। নিখরচার হোটেলের ভাড়া ৪০ থেকে বেড়ে এক দেড়শ’তে দাঁড়িয়েছে। তবু, ব্যয়বহুল ঢাকার গরিবের কাছে এ-ই যেনো পাঁচতারকা।

সময়টা মুক্তিযুদ্ধের বেশ আগের। সদরঘাট তখন ঢাকাকে বেঁধেছে যোগাযোগের বন্ধনে। কোর্টকাচারিতে আসা মানুষের সকালে এসে সন্ধ্যায় ফেরা অসম্ভব। যাত্রাবিরতির সম্বল তখন বুড়িগঙ্গাপারের ভাসমান হোটেল।

শুরুতে ছিল কাঠের বোট। অতঃপর অবকাঠামোতে যোগ হয় লোহালক্কর। একতলা ভেদিয়ে উঠেছে দোতলা। গরিবের ‘ফাইভ স্টার’ বলে খ্যাত এসব হোটেলের অবস্থান বাবুবাজার ব্রিজের পশ্চিম পাশে।

শরিয়তপুর মুসলিম হোটেলের মালিকপক্ষ মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, শুধু খাবার মিল দিত ভাড়া লাগতো না। এখন খাবারের ব্যবস্থা নেই। হোটেলগুলো স্ট্রিল হয়েছে ৯১ সালে, এর আগে কাঠের নৌকা ছিল।

হোটেলের কক্ষগুলোতে যোগ হয়েছে লাইট, ফ্যানসহ আরও কিছু সুবিধা। তাই ৪০ টাকার ভাড়া বেড়ে একশ’র উপরে। শ্রমিক, দিনমজুর, হকার, ফল ব্যবসায়ী কিংবা কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসা মানুষ ভাসমান হোটেলের অতিথি। পানির কুলকুল শব্দ আর নিরবতা ভেঙ্গে জাহাজের হুইসেল মেহমানদের কেউ কেউ বাড়তি বিনোদন হিসেবেও নেন।

আগত অতিথিরা জানান, ঢাকায় এসেছি চাকরির খোঁজে। এখানে একটু খরচ কম তাই এই জায়গায় থাকি। আরেকজন বলেন, এখানে থেকে খুব আরামে আছি, ভাল আছি।

তবে, হোটেলের স্থান তিনবার পরিবর্তন হওয়ায় অতিথির সংখ্যা তুলনামূলক অনেকে কমেছে।

হোটেল মালিকরা জানান, আমরা ছিলাম সদরঘাটের ওয়াইজঘাটে। ওখান থেকে এখানে নিয়ে আসার পরে কাস্টমার কমে গেছে। পুরনোরা জানেনা, খুঁজে পায় না।

কালের সাক্ষী ভাসমান হোটেলগুলো সংরক্ষণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি ভূক্তভোগীদের।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর