হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফুটবল খেলাটা যে কাগজে-কলমে হয় না, হয় মাঠে, সেটার আরেকটা জলজ্যান্ত প্রমাণ দেখা গেল পিএসজি-ক্লাব ব্রুজের মধ্যকার ম্যাচে। লিওনেল মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে নেমেছিলেন পিএসজির হয়ে। মনে হয়েছিল, গোলবন্যায় হয়তো উড়েই যাবে বেলজিয়ান ক্লাবটি। কিন্তু কিসের কী! মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে ত্রয়ী একটা গোলও পেলেন না।
চলতি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে দলে ভিড়িয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল পিএসজি। তারকা ঠাসা দলটির বর্তমান দলবদলে মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। চোখ কপালে উঠা মূল্যের দল হয়েও পুচকে ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে হোচট খেল ফরাসিরা। ইউরোপসেরার মঞ্চে স্বপ্নের মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে ত্রয়ীদের রুখে দিয়েছে মাত্র ১৪০ কোটি টাকা মূল্যের ক্লাব ব্রুজ!
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাঠে ১-১ ড্র করে ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বে অভিযান শুরু করেছে ফরাসি ক্লাব পিএসজি।
ম্যাচের মাত্র ১৫ মিনিটেই আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্ত থেকে এমবাপ্পের ক্রসে গোল করেন পিএসজিকে এগিয়ে নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আন্দের এরেরা। নতুন কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর অধীনে নিজেকে যেন নতুন করে ফিরে পেয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সাবেক এই মিডফিল্ডার। বেশ গোল পাচ্ছেন তিনি। এই মৌসুমে এর মধ্যেই এরেরার গোল হয়ে গেল চারটি।
গোল খেয়ে ভড়কে যায়নি ব্রুজেস। উল্টো পিএসজির রক্ষণভাগে একের পর এক ত্রাস ছড়িয়েছে তারা। ইউক্রেনিয়ান লেফটব্যাক এদুয়ার্দ সোবোলের সহায়তায় ম্যাচের ২৭ মিনিটেই দলকে সমতায় ফেরান ব্রুজেসের অধিনায়ক, বেলজিয়ান মিডফিল্ডার হান্স ভানাকেন।
গোল করার পরও বেশ কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিল ব্রুজেস। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। ওদিকে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন পিএসজির কোস্টারিকান গোলকিপার কেয়লর নাভাস। গোটা ম্যাচে ছয়-ছয়টা সেভ করেছেন এই গোলকিপার। এর একটা-দুটোয় হাত ফসকে গেলে আজ পিএসজির কপালে দুঃখই ছিল!
তবে মেসি যে একদমই বাজে খেলেছেন, বলা যাবে না। চ্যাম্পিয়নস লিগে আজ নিজের ১৫০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন এই তারকা। একবার পোস্টেও মেরেছেন, কিন্তু আরাধ্য গোলটা আসেনি। ব্রুজেসের প্রেসিংয়ের সামনে বেশ অসহায় মনে হচ্ছিল পিএসজিকে। মেসি নিজেও দ্বিতীয়ার্ধে হলুদ কার্ড দেখেছেন একটা, ওদিকে ৫১ মিনিট পর এমবাপ্পেকে তুলে নেন কোচ পচেত্তিনো। সে হিসাবে পিএসজির বিখ্যাত এই ত্রয়ী মাঠে একসঙ্গে ছিলেন ৫১ মিনিট।
দুর্দান্ত এই আক্রমণভাগ নিয়েও ব্রুজেসের গোলে মাত্র নয়টি শট মেরেছেন মেসি-নেইমাররা, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে। ওদিকে ব্রুজেস শট মেরেছে ১৫টি, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। বলা যেতেই পারে, সমানে সমানে পিএসজিকে টেক্কা দিয়ে গেছে দলটা! সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার, যে ম্যাচে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে খেলেছেন, সে ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়েছেন ব্রুজেসের আনকোরা ডাচ্ উইঙ্গার নোয়া লাং!