হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী, ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত দেশের কোনো নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়া হয়না। তবে এবার ভিন্ন পথে হাঁটার পরিকল্পনা করছে সরকার। বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার বিষয়ে ‘কমিশন বৈঠকে’ বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীকাল সোমবার (২৩ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় ইসির সভাকক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির বিভিন্ন কর্মকর্তারা জানায়, ইসি সচিবালয়ের প্রস্তাবের ওপর কমিশন অনুমোদন দিলে সেপ্টেম্বর থেকেই ১৮ বছরের কম বয়সীরা এনআইডি নিতে পারবে। সরকার সব বয়সীদের করোনা টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদেরও টিকা দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। ধীরে ধীরে আরও কম বয়সীদের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে টিকা কার্ড পেতে যেন ১৮-এর নিচের বয়সীদের কোনো সমস্যা পোহাতে না হয়, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে।
এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর স্বাক্ষরিত ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ১ জুনয়ারি ২০০৬ বা এর পূর্বে জন্মগ্রহণকৃত নাগরিকদের নিবন্ধন করার লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহের জন্য কমিশনের অনুমোদন নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি বাস্তবায়ন করবেন এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার। বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে প্রস্তাবটি কমিশনের কাছে নথিতে উপস্থাপন করা হয়েছিল। নথিতে অনুমোদন না দিয়ে বিষয়টি বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য বলেছে কমিশন। তাই সোমবার এ নিয়ে আলোচনায় বসবে সংস্থাটি।
এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার এ বিষয়ে বলেন, ১৮ বছরের নিচের বয়সীদের করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে টিকা কার্ড পেতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তাই এ কার্যক্রম হাতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কিছুটা এগিয়ে থাকছি। যদি আরো নিচের বয়সীদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তখন তাদের কীভাবে এনআইডি দেওয়া যায়, তা নিয়ে পরবর্তীতে ভাবা হবে। আপাতত ১৬, ১৭ বছর বয়সীদের এনআইডি হোক। এ ক্ষেত্রে তারা অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র দিয়ে আবেদন করলেই হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে কেবল দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিয়ে আসতে হবে।
এর আগে, ২০১৯ সালে ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারীদের তথ্য নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেই সময় যাদের বয়স ১৬ বা তার ঊর্ধ্বে তাদের তথ্য নিয়ে রাখা হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই বয়স ১৮ বছর পূর্ব হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়ে গেছেন। বাকিরা কয়েক মাসের মধ্যেই ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন। সেই সময় যারা নিবন্ধন করেছিলেন তাদের এনআইডি সরবরাহ চলমান রয়েছে। ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারির পর থেকে ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি যারা জন্মগ্রহণ করেছেন তারাও এখন এনআইডি পাবেন বয়স ১৮ না হলেও।