নজর কেড়েছে ৩২ মণ ওজনের চাঁপাই সম্রাট

 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সবার নজর কেড়েছে ৩২ মণ ওজনের `চাঁপাই সম্রাট’। বিশালাকৃতির দেহ, চলন-বলন এবং আয়েশি খাবার খাওয়ার জন্যই তার এমন নাম। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার গরুটি দেখতেও বেশ মোটাতাজা ও আকর্ষণীয়। জেলার সবচেয়ে সুদর্শন ও বড় চাঁপাই সম্রাটকে দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক এলাকাবাসাী। দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন ক্রেতারাও। ৩২ মণ ওজনের সম্রাটের মালিক দাম হাঁকছেন ৩০ লাখ টাকা।

 অস্ট্রেলিয়ান জাতের বিশালাকৃতির এই গরুটির মালিক শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জুলফিকার আলী। উচ্চশিক্ষিত ও একাধিকবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও বরাবরই একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল জুলফিকার আলীর। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গত ১৫ বছর আগে শুরু করেন খামারে গরু পালন। তবে গত এক যুগের বেশি সময়ের অভিজ্ঞতায় এই বছর সবচেয়ে বড় আকারের গরু জুলফিকারের খামারে। আশপাশের সকল পাইকারি ব্যবসায়ী ও উৎসুক জনতার আগ্রহে পরিণত হয়েছে তার খামারের চাঁপাই সম্রাট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে তার গরুটির ছবি।

ইউপি সদস্য ও গরুর মালিক জুলফিকার আলী বলেন, ১৫ বছর ধরে গরুর খামার করি। বর্তমানে আমার খামারে চাঁপাই সম্রাট ছাড়াও আরও চারটি গরু আছে। সব গরুই বিক্রয়যোগ্য। এদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় চাঁপাই সম্রাট। খামারে একটি অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি গাভী ছিল। তার গর্ভে চার বছর আগে জন্ম হয় এই গরুটির। ছোট থেকেই বেশ ভালো খাবার আর প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হওয়ায় সে খুবই শান্ত স্বভাবের। এ ধরনের গরু জেলায় আর একটিও নেই।

তিনি আরও বলেন, গরুটিকে মোটাতাজা করতে বিশেষ কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবে খড়, ভুসি, গম, খৈল, কলা ও ঘাস খেয়ে থাকে। এছাড়া প্রতিদিন লালি ও খৈল দিয়ে ছানা তৈরি করে খেতে দেওয়া হয় গরুটিকে। জুন মাসের শেষের দিক থেকেই গরুর পাইকাররা আসছেন চাঁপাই সম্রাটের খোঁজে। তারাও গরুটিকে দেখে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন। কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় তাকে বিক্রি করছি না।

চলমান বিধিনিষেধ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে জুলফিকার আলী বলেন, যদি ঈদের আগে সব পশুর হাট খুলে দেয়, তাহলে ঢাকার কোনো এক হাটে গরুটিকে বিক্রি করব। তবে অনলাইনেও বিক্রির চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু বিশালাকৃতির ও দাম বেশি হওয়ায় এই মাধ্যমে (অনলাইনে) তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। হাটে গিয়ে বিক্রি করতে না পারলে ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রণজিৎ চন্দ্র সিংহ বলেন, আমি নিজে জুলফিকার আলীর বাসায় গিয়ে ফিতা দিয়ে গরুটি মেপেছি। এতে হিসাবনিকাশ করে দেখা দেখা গেছে, আনুমানিক ওজন ১২৫৯ কেজি বা ৩২ মণের কাছাকাছি। শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রতিবছর ইদকে সামনে রেখে অনেক খামারী গরু মোটাতাজাকরণ করে থাকে। তবে এমন বিশালাকৃতির গরু আর দেখা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ান হলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি খামারী জুলফিকার আলী গতবছর বিক্রির চেষ্টা করেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর