চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহণ জাহাজ এবং খালি কন্টেইনারের সংকট নেই – নৌপরিবহন সচিব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য জাহাজিকরণে বড় ধরনের কোনো সমস্যা নেই। চট্টগ্রাম বন্দর  থেকে পণ্য পরিবহণে জাহাজ এবং  খালি কন্টেইনারের সংকট নেই। গত ১৫ দিনে  বাংলাদেশ হতে ২৬টি জাহাজ ছেড়ে গেছে; সেগুলোর ক্যাপাসিটি ছিল ৩৮ হাজার টিইইউএস (বিশ ফুটের কন্টেইনার)। কিন্তু  জাহাজগুলো পণ্য পরিবহণ করেছে ২৭ হাজার টিইইউএস। অর্থাৎ ১১ হাজার টিইইউএস স্পেস অব্যবহৃত থেকেছে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভিন্ন অফডকে প্রায় ৪০ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেইনার রয়েছে।

আজ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে ‘চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য জাহাজিকরণ সংক্রান্ত’ এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

 সভায় জানানো হয়, পণ্য ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ সংক্রমনজনিত লকডাউনের  সময়েও চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য এবং কন্টেইনার আনলোডিং, আমদানিকারক বরাবর ডেলিভারি এবং রপ্তানি কন্টেইনার জাহাজে বোঝাই কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ২৩৬ টিইইউএস কন্টেইনার, ১১ কোটি ৩৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৩ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৪ হাজার ৬২টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে। যেখানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৪ হাজার ১৪২ টিইইউএস কন্টেইনার, ১০ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩ হাজার ৭৬৪টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কার্গো, কন্টেইনার এবং জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১১.৯৮%, ৩.০৯%  এবং ৭.৯২%  ভাগ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সভায় আরো জানানো হয়, ছোট খাটো যেসব সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। ভবিষ্যতে বন্দরের চাহিদা মোকাবেলা করা এবং সম্ভাব্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সুলতান আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কন্টেইনার শিপিং এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশন (বাফা), বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার  ডিপো এসোসিয়েশন (বিকডা) এবং সংশ্লিষ্টরা যুক্ত থাকবে।

সভায়  বাংলাদেশ হতে রপ্তানি বোঝাই কন্টেইনার দ্রুত রপ্তানির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনাগুলো হলো: শিপিং এজেন্ট এবং মেইন লাইন অপারেটরগণের (এমএলও) মধ্যে ‘কমন ক্যারিয়ার এগ্রিমেন্ট’ করা; ডাইরেক্ট কলিং অভ্ শিপ টু ফাইনাল ডেস্টিনেশন;  এমএলওগণের মধ্যে কন্টেইনার সরাসরি ইন্টারচেঞ্জ; ফ্রেইট ফরওয়ার্ডগণ কর্তৃক অফডকসমূহকে  বিলম্বে কার্গো লোডিং প্লান প্রদান না করা; অফডকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। এগুলো বাস্তবায়ন হলে জাহাজ ও কন্টেইনার জট কমে আসবে। অধিক হারে কন্টেইনার রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে।

ভার্চুয়াল বৈঠকে কাস্টমসের সদস্য (পলিসি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুজ্জামান, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা,  বিজিএমইএ’র  প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হাতেমসহ এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কন্টেইনার শিপিং এসোসিয়েশন, বাফা এবং বিকডার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর  আবু জাফর মো. জালালউদ্দিন এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সাব্বির মাহমুদ  ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।

#

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর